ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এএসএম সালেহ আহমেদ বলেছেন, সরকারি ক্রয় ব্যবস্থাপনা শুধু একটি প্রশাসনিক কাজ নয়; এটি সুশাসন, স্বচ্ছতা এবং জনগণের আস্থা অর্জনের মূল চাবিকাঠি। আমরা যদি নিয়ম-নীতি মেনে, প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার করে ক্রয় কার্যক্রম সম্পাদন করতে পারি, তাহলে উন্নয়ন প্রকল্পগুলো দ্রুত, মানসম্মত ও টেকসইভাবে বাস্তবায়ন সম্ভব হবে। ক্রয়ের ক্ষেত্রে সততা ও নৈতিকতার জাদুতেই দূর হবে দুর্নীতি।
বুধবার (৮ অক্টোবর) ভূমি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘সরকারী ক্রয় ব্যবস্থাপনা (পিপিআর-২০২৫)’ শীর্ষক লার্নিং সেশনে মুখ্য আলোচকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। প্রশিক্ষক হিসেবে ছিলেন সাবেক সচিব ও সাবেক নির্বাহী চেয়ারম্যান জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ মো. ফারুক হোসেন।
সরকারের এই সিনিয়র সচিব বলেন, সরকারি প্রশাসনের কার্যক্রমকে গতিশীল, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক করার ক্ষেত্রে ক্রয় ব্যবস্থাপনা বা পাবলিক প্রকিউর ম্যানেজমেন্ট (পিপিআর-২০২৫) একটি প্রধান ভূমিকা পালন করে।
তিনি বলেন, সরকার e-GP (Electronic Government Procurement) চালু করে সরকারি ক্রয়ে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছে। দরপত্র আহ্বান থেকে শুরু করে মূল্যায়ন ও চুক্তি সম্পাদন পর্যন্ত সবকিছুই অনলাইন প্ল্যাটফর্মে হচ্ছে। এর ফলে সময়, ব্যয় এবং অনিয়ম সবকিছুই উল্লেখযোগ্যভাবে কমে এসেছে। তবে প্রযুক্তি ব্যবহারের পাশাপাশি আমাদের প্রয়োজন নৈতিকতা, দক্ষতা এবং সততার সমন্বয়। কারণ, নীতিগত দুর্বলতা থাকলে কোনো সিস্টেমই শতভাগ কার্যকর হতে পারে না।
সরকারি ক্রয় প্রক্রিয়ার প্রতিটি ধাপে আইন, নীতি, পেশাগত মানদণ্ড ও সামাজিক দায়বদ্ধতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা অপরিহার্য বলেও উল্লেখ করেন সিনিয়র সচিব।
ভূমি মন্ত্রণালয় একমাত্র মন্ত্রণালয় যারা সর্বপ্রথম এই সরকারী ক্রয় ব্যবস্থাপনা (পিপিআর-২০২৫)— শীর্ষক লার্নিং সেশনের আয়োজন করেছে উল্লেখ করে সাবেক সচিব ও সাবেক নির্বাহী চেয়ারম্যান জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও প্রশিক্ষক মো. ফারুক হোসেন বলেন, পিপিআর-২০২৫ এর মূল পরিবর্তন ও বৈশিষ্ট্য হচ্ছে যে ই-জিপি বাধ্যতামূলক; অভ্যন্তরীণ ক্রয়ের ১০ শতাংশ প্লাস-মাইনাস বিধি বাতিল; প্রকৃত উপকারভোগীর তথ্য প্রকাশ; টেকসই ক্রয়; কৌশলগত পরিকল্পনা বাধ্যতামূলক; ভৌত সেবাকে স্বতন্ত্র ক্যাটাগরি; ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি ও দর-নেগোসিয়েশন সম্প্রসারণ; ডিবারমেন্ট বোর্ড; সম্পদ বিপর্যয় প্রক্রিয়া স্পষ্টীকরণ।
লার্নিং সেশনে উপস্থিত ছিলেন ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান এজেএম সালাউদ্দীন নাগরি; ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. সাইদুর রহমানসহ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
প্রকাশক ও সম্পাদক- আলি আবরার । নিরালা, খুলনা থেকে প্রকাশিত