রাজধানী ঢাকায় ভাসমান মানুষকে টিকা দেওয়া শুরু হচ্ছে আজ রবিবার থেকে। প্রাথমিকভাবে দেশের বাদ পড়া বিভিন্ন শ্রেণির ১ কোটি ২১ লাখ মানুষকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ১ লাখ ভাসমান মানুষ টিকা পাবেন। তবে এ সংখ্যা বেশি হলেও টিকা দিতে পারবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
ঢাকায় আজ সন্ধ্যা ৭টায় কমলাপুর স্টেশনে ভাসমান মানুষের টিকার উদ্বোধন হবে। তারা পাবেন এক ডোজের জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকা। এনজিওর তালিকা অনুযায়ী ঢাকার বিভিন্ন স্থানে দিন-রাত যেকোনো সময় অধিদপ্তরের বিশেষ টিম টিকা দেবে।
এ ব্যাপারে সরকারের করোনা টিকা ব্যবস্থাপনা টাস্কফোর্স কমিটির সদস্য সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. শামসুল হক জানান, রবিবার থেকে ঢাকায় ভাসমান মানুষ ও ঢাকাসহ সারা দেশে কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের করোনার টিকা দেওয়া শুরু হবে। পরে বাদ পড়া অন্য জনগোষ্ঠীদেরও টিকা দেওয়া হবে।
ভাসমান মানুষের টিকা ব্যবস্থাপনার পরিকল্পনা তুলে ধরে ডা. শামসুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, এই শ্রেণির মানুষের সংখ্যা নিরূপণ করা কঠিন। তারা সব সময় নির্দিষ্ট কোথাও থাকে না। বছরের একেক সময় একেক জায়গায় থাকে। তারপরও আমরা একটা সংখ্যা পেয়েছি। বাচ্চাসহ তাদের সংখ্যা আড়াই থেকে তিন লাখ। বাচ্চা বাদ দিলে টিকা উপযোগী এক লাখের মতো হবে। আমরা এদেরই টিকা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছি। এদের মধ্যে অনেকে ঝুপড়ি ঘরে থাকে, রিকশা চালায় বা যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) আছে, তাদের অনেকেই টিকা নিয়েছে। তাই আমরা এক লাখ ভাসমান মানুষকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছি। তবে এর চেয়ে বেশি দিতে হলেও অসুবিধা নেই। আমাদের কাছে টিকা আছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা একেক জায়গায় যাব। স্থানভেদে এ সংখ্যা কোথাও ২০০, কোথাও ৫০০, কোনো জায়গায় ১ হাজার ২০০ আছে। ওয়ার্ডভেদে এনজিওগুলো তালিকা করে দেবে। আমরা সেভাবেই টিকা দেব। ভাসমান মানুষের সবাই যেন টিকা পায়, সে জন্য বিশেষ সুযোগ রেখেছি। এনজিওরা যখন ওদের একত্র করতে পারবে, সেটা রাত বা সন্ধ্যা যখনই হোক, আমাদের বিশেষ টিম গিয়ে টিকা দিয়ে আসবে। কোনো কোনো এলাকায় বিকেলে পাওয়া যাবে, সেখানে তখনই দেব।
এদিকে দেশে এক দিনের ব্যবধানে করোনার রোগী কমলেও মৃত্যু ও শনাক্ত হার বেড়েছে। এক দিনে শনাক্ত কমে ৮ হাজারের ঘরে এসেছে। আর মৃত্যু বেড়েছে ৬ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে ৮ হাজার ৩৫৯ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩৬ জনের। পরীক্ষায় বিবেচনায় শনাক্ত হার দাঁড়িয়েছে ২৩ দশমিক ৮৩ শতাংশ। এর আগের দিন শুক্রবার শনাক্ত হয়েছিল ৯ হাজার ৫২ জন এবং মৃত্যু হয় ৩০ জনের।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্যমতে, গত এক দিনে দেশে ৩৫ হাজার ৭৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এতে শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ২৩ দশমিক ৮৩ শতাংশ। আর এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১ কোটি ২৬ লাখ ৮৭ হাজার ৫৮৮টি। নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ৬১ শতাংশ। মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৪ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত ও মৃত্যু নিয়ে দেশে করোনা শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৮ লাখ ৫৩ হাজার ১৮৭ ও মারা গেছে ২৮ হাজার ৫৬০ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত ৮ হাজার ৩৫৯ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ৬ হাজার ৩৬, ময়মনসিংহে ১৬২, চট্টগ্রামে ১ হাজার ২৭৬, রাজশাহীতে ২৩২, রংপুরে ১০১, খুলনায় ২৩১, বরিশালে ১১১ এবং সিলেট বিভাগে ২১০ জন রয়েছে। এ সময় মৃতদের মধ্যে ২১ জন পুরুষ ও ১৫ জন নারী। তাদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ২৫, চট্টগ্রামে ২, রংপুরে ২, ময়মনসিংহে ২, রাজশাহীতে ১, খুলনায় ৩ এবং সিলেট বিভাগে ১ জন মারা গেছে।
পিএসএন/এমঅাই
প্রকাশক ও সম্পাদক- আলি আবরার । নিরালা, খুলনা থেকে প্রকাশিত