 
    গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচন করতে গিয়ে বেশ বিকাপে পড়তে হয়েছে নির্বাচন কমিশনকে। অনিয়ম ঠেকাতে না পেরে বন্ধ করে দিতে হয়েছে ভোট। তাই এবার আসন্ন রংপুর সিটি করপোরেশন (রসিক) নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি তদারকিতে নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষক টিম গঠন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি।
জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, সংশ্লিষ্ট এলাকার বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তা ও দল নিরপেক্ষ বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে একটি ভিজিল্যান্স ও অবজারভেশন টিম গঠনের নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। যার নির্বাচনী পরিস্থিতি ও আচরণবিধি প্রতিপালন নিয়ে কাজ করবে।
ইতোমধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আবদুল বাতেনকে এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান।
এই টিমের কাজের কথা উল্লেখ করে ইসির পক্ষ থেকে পাঁচ দফা নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।
রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন আজ মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর)।
মনোনয়নপত্র বাছাই আগামী ১ ডিসেম্বর, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের ৪ ডিসেম্বর, আপিল নিষ্পত্তি ৭ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ৮ ডিসেম্বর, প্রতীক বরাদ্দ ৯ ডিসেম্বর এবং ভোটগ্রহণ ২৭ ডিসেম্বর।
সকাল সাড়ে আটটা থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
নির্দেশনায় বলা হয়, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয় এবং ওই নিরপেক্ষতা যাতে জনগণের কাছে দৃশ্যমান হয় তা নিশ্চিত করতে রিটার্নিং অফিসারের নেতৃত্বে বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে ভিজিল্যান্স ও অবজারভেশন টিম গঠন করতে হবে। ওই টিমে বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটদেরও অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।
জেলা নির্বাচন অফিসার টিমের সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। টিমে বেসরকারি পর্যায়ের দল নিরপেক্ষ বিশিষ্ট ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। নির্বাচনী এলাকার ব্যাপ্তি বিবেচনায় প্রয়োজনে একাধিক ভিজিল্যান্স ও অবজারভেশন টিম গঠন করতে হবে।
ভিজিল্যান্স ও অবজারভেশন টিমের কার্যাবলি
১. সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশন এলাকায় নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ হচ্ছে কি না অথবা ভঙ্গ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে কি না তা সরেজমিনে পরিদর্শন।
২. নির্বাচনী প্রচারণা ও নির্বাচনী ব্যয় বাবদ নির্বাচন বিধিমালার ৪৯ বিধিতে নির্ধারিত সীমার অতিরিক্ত ব্যয় হচ্ছে কি না বা অন্যান্য বিধি-বিধান যথাযথভাবে প্রতিপালিত হচ্ছে কি না তা সরেজমিনে পরিদর্শন।
৩. আচরণ বিধিমালা ভঙ্গের কোনো বিষয় নজরে আসা মাত্রই বিধি অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ; অন্যান্য নির্বাচনী বিধি-নিষেধ ভঙ্গের ক্ষেত্রে মামলা দায়েরের ব্যবস্থা গ্রহণ এবং উপযুক্ত ক্ষেত্রে ফৌজদারি আদালতেও অভিযোগ দায়ের করতে হবে।
৪. এছাড়াও স্থানীয় পরিস্থিতির ওপর তিনদিন পরপর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন রিটার্নিং অফিসারের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনে প্রেরণ; টিমকে প্রয়োজনে উদ্ভূত সমস্যাবলি তাৎক্ষণিকভাবে নিরসনের পরামর্শ দিতে হবে।
৫. প্রার্থী বা তার নির্বাচনী এজেন্ট বা তাদের পক্ষে অন্য কেউ আচরণ বিধিমালার কোনো বিধি ভঙ্গ করলে বা ভঙ্গ করার চেষ্টা করলে বা বিধিমালার কোনো বিধি বিশেষ করে নির্বাচনী ব্যয় সংক্রান্ত বিধি-বিধান যথাযথভাবে প্রতিপালন না করলে তাৎক্ষণিকভাবে নির্বাচন কমিশনকে লিখিতভাবে অবহিত করতে হবে। অন্যদিকে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে গঠিত ভ্রাম্যমাণ আদালতকেও তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি অবহিত করতে হবে।
গত ফেব্রুয়ারিতে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম বড় নির্বাচন করে কুমিল্লা। সেখানে সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনেকটা শান্তিপূর্ণ হলেও ভোটের ফলাফল ঘোষণার ঠিক শেষ সময়ে কয়েকটি কেন্দ্রের ফলাফল নিয়ে আপত্তি করেন পরাজিত প্রার্থী। যা নিয়ে অনেকে সমালোচনাও করেছেন।
পরে গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে অনিয়ম হওয়ায় এক পর্যায়ে পুরো ভোট বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে অনিয়মের তদন্ত হলেও এখনও তার প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়নি। তবে আগামী জানুয়ারির মধ্যে এখানকার ভোটের বিষয়টি সমাধান করতে চায় ইসি।
প্রকাশক ও সম্পাদক- আলি আবরার । নিরালা, খুলনা থেকে প্রকাশিত

 
                                    