কাজের জন্য দিনের বেশিরভাগ সময় সূর্যের আলোতে থাকতে হয়- এমন মানুষের সংখ্যা কম নয়।আর রোদের হাত থেকে ত্বক সুরক্ষিত রাখতে সানস্ক্রিন মাখার পাশাপাশি ঢিলেঢালা শরীর ঢেকে রাখে এমন পোশাকের কথা বলা হয়।
সূর্যের আলোতে ত্বকের ক্ষতি হতেই পারে।এই বিষয়ে নিউ ইয়র্ক’য়ের ‘ওয়ায়ল মেডিকেল কলেজ অফ কর্নেল ইউনিভার্সিটি’র ত্বক-বিশেষজ্ঞ ডা. হ্যাডলি কিং ওয়েলঅ্যান্ডগুড ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেন, “সূর্যের তাপ ত্বকের প্রোটিন যেমন- কোলাজেন এবং এলাস্টিন পাশাপাশি কোষের ডিএনএ ক্ষতিগ্রস্ত করে। ফলে দেখা দেয় বলিরেখা।”
একই প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা ভিত্তিক ত্বক-বিশেষজ্ঞ ডা. তৃষ্ণা খান্না মন্তব্য করেন, “সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির কারণে ত্বক আর্দ্রতা হারায়। যত বেশি রোদে থাকা হবে ততই ত্বক শুষ্ক হতে থাকবে ভেতর থেকে। এ কারণে পর্যাপ্ত পানি পান গুরুত্বপূর্ণ।”
সূর্যের কারণে হওয়া কোষের ক্ষতি কমাতে অ্যান্টিঅক্সিডেটন্ট ভিটামিন সি সমৃদ্ধ সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উচিত। পাশাপাশি ‘হিউমেকটেন্টস’, ‘ইমোলিয়েন্টস’ বা ‘অক্লসিভস’ উপাদান যুক্ত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করার পরামর্শ দেন, ডা. কিং। এগুলো ত্বকের সুরক্ষার স্তর হিসেবে কাজ করে।
এছাড়া ‘হায়ালুরনিক অ্যাসিড’, ‘গ্লিসারিন’, ‘স্কোয়ালেন’, ‘সেরামাইডস’ ও তেল সমৃদ্ধ ময়েশ্চারাইজার ত্বকের সুরক্ষার স্তরকে স্বাস্থ্যকর রাখতে সাহায্য করে।প্রতিনিয়ত ঘরের বাইরে যাওয়া না হলেও বা সানস্ক্রিন ব্যবহার না করলেও এসব উপাদান সমৃদ্ধ প্রসাধনী ত্বক ভালো রাখতে সাহায্য করে।
রোদপোড়া চিহ্নিত করার পন্থা
কে যদি লালচেভাব হয়, ফুলে ওঠে, স্পর্শ করলে গরমভাব অনুভূত হয়, জ্বালা বা সুই ফোটার মতো লাগে তাহলে বুঝতে হবে রোদে পোড়ায় আক্রান্ত হয়েছেন।ডা. খান্না বলেন, “প্রধানত লালচেভাবে সাথে ব্যথা ও চামড়ার ওঠার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয় ত্বক রোদে পুড়লে।”
রোদপোড়া সারাতে
“এরকম হলে মুখে খাওয়া ব্যথা কমানোর ওষুধ সেবন করা যেতে পারে, যেমন- অ্যাসপিরিন”- পরামর্শ দেন ডা. কিং।ঠাণ্ডা পানিতে গোসল করার পাশাপাশি ক্ষারমুক্ত মৃদু সাবান ব্যবহার করতে হবে। গ্লিসারিন সাবান এক্ষেত্রে ভালো কাজ করবে।গোসলের পর আলতো চাপে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। কোনো মতেই ঘষে লাগানো যাবে না।রোদপোড়া থেকে জ্বালা বা চামড়া ওঠার সমস্যা দেখা দিলে
ত্বকের যেসব অংশে জ্বালাভাব হবে সেখানে ঠাণ্ডাভাপ বা ভেজা কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে।ডা. কিং বলেন, “সবচেয়ে ভালো হয় কম চর্বিযুক্ত তরল ঠাণ্ডা দুধে কাপড় ভিজিয়ে ১৫ মিনিট ধরে রাখা। এই ধরনে দুধে থাকে পরিষ্কারক ও আর্দ্রতা রক্ষাকারী উপাদান। আর রোদপোড়া থেকে চামড়া ওঠা সমস্যা সমাধানে এটা বেশি কার্যকর।”
“যদি গরম থেকে ত্বকে ফুসকুড়ি ওঠ তবে খোটা যাবে না” বলেন ডা. খান্না, “খুটলে অবস্থা আরও খারাপ হবে, জ্বালাভাব বাড়বে।”
“চামড়া ওঠা ত্বক সেরে ওঠার সাধারণ লক্ষণ। এই প্রক্রিয়া চলাকালে ‘নন-গ্রিজি’ ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে নির্দিষ্ট জায়গাতে। শিয়া বাটার ও নিয়াসিনামাইড যুক্ত ময়েশ্চারাইজার এক্ষেত্রে উপকারী”- বলেন ডা. কিং।
মনে রাখতে হবে
গরম আবহাওয়া মানেই আর্দ্রতা শুষে নেওয়ার মতো সূর্যালোক। তারমানে এই নয় সূর্যের আলোতে গেলে ত্বকের যত্নে অতিরিক্ত কিছু করতে হবে।
ত্বক ঢেকে রাখে এমন কাপড় পরা, আর্দ্র থাকা মানে পর্যাপ্ত পানি পান, ‘বোর্ড স্পেক্ট্রাম এসপিএফ ৩০’ যুক্ত সানস্ক্রিন ব্যবহার এবং ত্বক আর্দ্র রাখে এমন ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারে সূর্যালোকের ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া যায়
প্রকাশক ও সম্পাদক- আলি আবরার । নিরালা, খুলনা থেকে প্রকাশিত