ছোট ছোট পুতুল ছোট ছোট হাতে খেলছে- কিন্তু সেগুলো প্লাস্টিকের। যেগুলো শিশুদের জন্য যেমন ক্ষতিকর তেমনি পরিবেশেরও বারোটা বাজাচ্ছে।
তবে এমন কোনো পুতুল কি তৈরি হতে পারে না, যেগুলো শিশুর জন্য ক্ষতিকর হবে না। বরং উল্টো শেখাবে নৈতিকতা আর ধীর-স্থির হওয়ার শিক্ষা।
এমন ভাবনা থেকেই তরুণ উদ্যোক্তা সিফাত আরা আজিম ২০২১ সালে করোনাভাইরাস পরবর্তী সময়ে গড়ে তুলেন ‘বব দ্যা টাইনি টার্টল’ প্রতিষ্ঠান।
সিফাতের ভাষায়, “প্রথমেই যে চিন্তাটা মাথায় এসেছিল সেটা হল, আমাদের দেশের শিশুরা পাশ্চাত্য পুতুলগুলোর পরিবেশে বেড়ে ওঠে। যেমন- বিভিন্ন সুপারহিরোদের পুতুল। অথচ নিজের দেশের সংস্কৃতির সাথে মিল রেখে যদি নানান চরিত্রের পুতুল থাকতো যেগুলো শিশুরা নিরাপদে ব্যবহার করতে পারবে তাহলে তাদের মধ্যে দেশীয় সংস্কৃতির বিকাশ ঘটানো যাবে।”
আর সেই চিন্তা থেকেই তিনি বেছে নেন ‘এজো ফ্রি ডাই’য়ের সুতা। এই সিন্থেটিক রঙিন সুতায় বিষাক্ত কোনো উপাদান ব্যবহার না করে বিশেষ পদ্ধতিতে সুতা রং করা হয়।
আর এই সুতা দিয়ে পুতুলগুলো তৈরিতে ব্যবহার হয়েছে জাপানি ‘আমিগুরুমি’ পুতুল তৈরির পদ্ধতি। অর্থাৎ পুতুলগুলো কুশিকাটা দিয়ে বুনন পদ্ধতিতে তৈরি করা।
প্রতিষ্ঠানের নামটা বিদেশি মনে হলেও সিফাত ব্যাখ্যা করেন, “বব’ মানে হল ‘বেস্ট অফ বেঙ্গলস’। আর ‘টাইনি টার্টল’ কথাটা দিয়ে বড় বড় বদলের পেছনে ছোট পদক্ষেপগুলোকে বোঝানো হয়েছে।
আর দেশীয় চরিত্রের বিকাশ ঘটাতে তৈরি করা হয়েছে লাল-সবুজ শাড়ি পর খোঁপায় লাল পলাশ গোঁজা পুতুল; নাম যার মুক্তি, যেন স্বাধীনতা সাহস ও দেশাত্মবোধের প্রতীক। বেঙ্গল টাইগার থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তৈরি করা হয়েছে ‘টিগি দ্য টাইনি টাইগার’। আরও আছে বরকত খালু, লম্বা চুলের বেবি খালা, রেইনবো স্যান্টা ইত্যাদি।
সিফাত বলেন, “এই ধরনের পুতুলগুলোকে হাতে তৈরি ‘ইকো ফ্রেন্ডলি’ বা পরিবেশ বান্ধব খেলনা বলা হয়। আমরা বাংলার ঐতিহ্যকে যেমন তুলে ধরার চেষ্টা করছি তেমনি খেলনাগুলো স্থায়ীত্বের দিক থেকেও এগিয়ে থাকবে।”
“শিশুর জীবনের প্রথম খেলনাই যেন হয় ক্ষতিকর উপাদান মুক্ত”- বলেন এই উদ্যোক্তা।
নববর্ষ কিংবা যে কোনো উৎসব অনুষ্ঠানে শিশুদের উপহার হিসেবে চমৎকার মাধ্যম হতে পারে ‘বব দ্য টাইনি টার্টল’য়ের পুতুলগুলো। ফেইসবুক পেইজ ছাড়াও বনানীর যাত্রা বিরতি’তে তাদের বিক্রয়কেন্দ্র থেকেও এই পুতুলগুলো সংগ্রহ করা যাবে।
প্রকাশক ও সম্পাদক- আলি আবরার । নিরালা, খুলনা থেকে প্রকাশিত