আজ থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু হয়েছে। দ্বিতীয় অধ্যায়ের প্রথম এবং প্রধান কাজ হচ্ছে নির্বাচন সুন্দরভাবে আয়োজন করা।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে প্রধান উপদেষ্টার বরাত দিয়ে প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ কথা জানান।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় মন্ত্রিপরিষদ কক্ষে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শুরু হয়। দুপুরে এ বৈঠক শেষ হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেন, আজকে অনেকগুলো বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা তার সূচনা বক্তব্যে বলেছেন, গত ৫ আগস্ট আমাদের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম অধ্যায় শেষ হয়েছে। আজ থেকে দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু। এ লক্ষ্যে গতকাল প্রধান উপদেষ্টা দপ্তর থেকে কমিশনকে নির্বাচন আয়োজনের জন্য বলা হয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসে রোজার আগে নির্বাচন আয়োজন জন্য বলা হয়েছে।
শফিকুল আলম বলেন, প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন আজ থেকে দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু এবং দ্বিতীয় অধ্যায়ের প্রথম এবং প্রধান কাজ হচ্ছে নির্বাচন সুন্দরভাবে করা। এটাই প্রধান কাজ। আমাদের পুরো ফোকাস নির্বাচনকে ঘিরে। উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন হবে। এছাড়া আরো দুইটা কাজ আছে আমাদের- একটা হলো সংস্কার, আরেকটা হচ্ছে ট্রায়াল।
আজকের বৈঠকে নির্বাচনের তারিখ নিয়ে কোনো কথা হয়েছে কিনা- জানতে চাইলে শফিকুল আলম বলেন, নির্বাচনের তারিখের বিষয়টা নির্বাচন কমিশন দেখেন। তবে যে টাইমলাইন অন্তর্বর্তী সরকার দিয়েছেন এখন সেটা নির্বাচন কমিশন ডেট জানাবেন। এটা ওনাদেন দায়িত্ব, তারাই আপনাদের জানাবেন।
নির্বাচনের বিতর্ক এড়াতে এসপি ওসিদের লটারির মাধ্যমে নিয়োগ হবে। সেক্ষেত্রে ডিসি নিয়োগে বিষয়ে কি সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ বিষয়ে কথাবার্তা হচ্ছে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। অতি শিগগিরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানতে পারবেন। নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যের পর আর এ বিষয়ে তেমন কোনো আলোচনা হয়নি। তবে সবার মূল ফোকাস হচ্ছে কিভাবে একটা সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও উৎসবমুখর নির্বাচন করা যায়। এটাই আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
সেটা করার জন্য প্রশাসন কি ভূমিকা নেবে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা করার জন্য আমাদের প্রচুর মিটিং হচ্ছে। গত এক মাসে প্রধান উপদেষ্টা দুইটা মিটিং করেছেন নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা বাহিনীদের নিয়ে। অনেক কথা বার্তা হয়েছে। এরমধ্যে একটা হচ্ছে- আনসার, পুলিশ এবং সেনবাহিনী কতো বেশি নিয়োজিত করতে পারি। সেটা ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে। আগে তো ছিলো ৮ লাখের মতো দেওয়া যাবে। তবে এখন আরও বেশি ৫০ হাজার দেওয়া যায় কিনা সেই চিন্তা ভাবনা করা হচ্ছে। আর্মির তরফ থেকে আগে এটা ধারণা দেওয়া হয়েছিল ৬০ হাজার সদস্য থাকবে। এখন চিন্তা করা হচ্ছে- কতো বেশি সংখ্যাক নিয়োজিত করা যায়৷ এটা প্রতিনিয়ত রিভিউ হচ্ছে।
আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগসহ ১৪ দল নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কিনা বা এ ধরনের কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে প্রেস সচিব বলেন, সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে জিজ্ঞেস করতে হবে। সরকারের তরফ থেকে আওয়ামী লীগের সকল কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। যত দিন না পর্যন্ত তাদের লিডারদের ট্রায়ালটা শেষ হচ্ছে।
রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যথেষ্ট পরিমাণ আস্থা তৈরি হয়েছে কিনা, জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টার রোজার আগে ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচনের যে ঘোষণা দিয়েছেন সেটা মোটামুটি সব রাজনৈতিক দলগুলো স্বাগত জানিয়েছেন। তাদের সঙ্গে তো এর আগে অনেক দফা আলোচনা হয়ছে, সামনে আরও আলোচনা হবে। তাদের সঙ্গে আমাদের ডায়লগ চলছে। আমরা নিশ্চিত যে আমাদের খুব ভালো একটা নির্বাচন হবে।
নির্বাচনে লেভেল প্লেইং ফিল্ড হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি মনে করি ফেব্রুয়ারিতে যে নির্বাচনটা হবে সেটা ফ্রি ফেয়ার হবে এবং উৎসবমুখর হবে। আমরা সবাই আনন্দের সঙ্গে ভোট দেবো। এতে কারো কোনো অভিযোগ থাকবে না।
প্রকাশক ও সম্পাদক- আলি আবরার । নিরালা, খুলনা থেকে প্রকাশিত