দেশের বাজারে ডিম ও মুরগির দাম বেড়েছে। গত সপ্তাহের তুলনায় প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। ডজনপ্রতি ডিমের দামও বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, টানা বৃষ্টির কারণে সরবরাহ কমে যাওয়ায় ডিম ও মুরগির দাম বেড়েছে।
এদিকে আগের সপ্তাহের তুলনায় চাল, মাছ ও সবজির দামও কিছুটা বেড়েছে। তবে কমেছে মসুর ডালের দাম।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, বাড্ডা ও জোয়ারসাহারা বাজার ঘুরে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটের মেসার্স মা আয়েশা ব্রয়লার হাউসের ব্যবসায়ী মো. আমজাদ হোসেন বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে টানা বৃষ্টির জন্য বাজারে মুরগির সরবরাহ কমে গেছে। যার কারণে দাম বেড়েছে। আজ (গতকাল) ব্রয়লার মুরগির প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৭৫ টাকা দরে। সোনালি মুরগি ৩২০ টাকা আর দেশি মুরগি ৫০০ থেকে ৫২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ’ তিনি বলেন, ‘বাড়তি দাম বেশি দিন থাকবে না। মুরগির সরবরাহ বেড়ে গেলে দাম কমে যাবে। ’ গত সপ্তাহে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকায় বিক্রি হয়। আর সোনালি মুরগির কেজি ছিল ২৯০ থেকে ৩০০ টাকা।
সপ্তাহের ব্যবধানে ডিমের দাম ডজনপ্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ টাকায়। জোয়ারসাহারা বাজারের মেসার্স ভাই ভাই স্টোরের ব্যবসায়ী মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘গত সপ্তাহে খুচরায় আমরা প্রতি ডজন ডিম বিক্রি করেছি ১৩৫ টাকায়, দাম বাড়ার কারণে এখন বিক্রি করতে হচ্ছে ১৪৫ টাকায়। ’
দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের ডিম ব্যবসায়ী বহুমুখী সমিতির সভাপতি আমান উল্লাহ বলেন, ‘টানা বৃষ্টির কারণে বাজারে ডিমের সরবরাহ কমে গেছে। এ সময় চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দাম কিছুটা বেড়েছে। দু-এক দিনের মধ্যেই এই দাম কমে আসবে। ’ বৃষ্টির কারণে ডিমের উৎপাদনও কিছুটা কমে গেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
নিত্যপণ্যের বাজার
সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে মসুরের ডাল কেজিতে ১০ টাকা কমে চিকন মসুর ডাল ১৩০ টাকায় ও মোটা মসুর ডাল ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চাল কেজিতে দু-তিন টাকা বেড়ে মোটা চাল (ব্রি-২৮) বিক্রি হচ্ছে ৫৮ টাকায়, চিকন চাল (মিনিকেট) ৭০ থেকে ৭৫ টাকায় ও ভালো মানের নাজিরশাইল চাল ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আগের দামেই পেঁয়াজ কেজি ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, আমদানি করা রসুন ১১০ থেকে ১২০ টাকায়, দেশি রসুন ৭০ থেকে ৮০ টাকায়, খোলা আটা ৫০ টাকা ও দুই কেজির প্যাকেট আটা ১১৫ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। চায়ের মধ্যে তাজা ব্র্যান্ডের ৪০০ গ্রাম প্যাকেটে ১০ টাকা বেড়ে ২১০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। তবে ইস্পাহানি ব্র্যান্ডের ৪০০ গ্রামের প্যাকেট আগের দামেই ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
জোয়ারসাহারা বাজারের আল আরাফা স্টোরের ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘সপ্তাহের ব্যবধানে নিত্যপণ্যের মধ্যে ডালের দাম কিছুটা কমেছে, কিছুটা বেড়েছে চাল ও চায়ের দাম। অন্যগুলো আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। ’
মাছ বাজার
সপ্তাহের ব্যবধানে মাছের দামও কিছুটা বেড়েছে। এক কেজি ওজনের রুই ২২০ থেকে ২৩০ টাকা, দেড়-দুই কেজি ওজনের রুই ২৬০ থেকে ৩০০ টাকায়, আড়াই কেজি থেকে তিন কেজি ওজনের রুই ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাঙ্গাশ ১৬০ টাকায় ও তেলাপিয়া ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বড় কাতল কেজি ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি সাইজের পাপদা ৩৩০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক কেজি ওজনের ইলিশ মাছ এক হাজার ২০০ টাকায়, ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা এবং ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায় কেজি বিক্রি হচ্ছে।
সবজিবাজার
টানা বৃষ্টির কারণে বাজারে সপ্তাহের ব্যবধানে সবজির সরবরাহ কমায় দাম কিছুটা বেড়েছে। বেগুন প্রকারভেদে প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৮০ টাকা, দেশি শসা ৬০ টাকা, পটোল, ঢেঁড়স ও চিচিঙ্গা প্রতি কেজি ৫০ টাকা, বাঁধাকপি ৫০ টাকা, শিম ১২০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১০০ থেকে ১২০ টাকা, টমেটো ১২০ টাকা, গাজর ১৩০ টাকা, কাঁকরোল ৮০ টাকা, লাউ আকারভেদে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, চালকুমড়া ৪০ টাকা, ছোট আকারের ফুলকপি ৪০ থেকে ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
পিএসএন/এমআই
প্রকাশক ও সম্পাদক- আলি আবরার । নিরালা, খুলনা থেকে প্রকাশিত