আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষের ভাত পচ্ছন্দ। যাদের ভাত পচ্ছন্দ তারা ভাত খেলে মোটা হয়ে যাবেন বা এর ক্ষতি অনেক এরকম চিন্তা ভাবনা বাদ দিন। ভাত যেমন সহজে রান্না করা যায় তেমনি ভাত খেলে পেট ভরাও থাকে অনেকক্ষণ। ভাত খাওয়ার জানা দরকার কিছু নিয়মও। কিভাবে ভাত খেলে উপকারিতা পাওয়া যাবে ও কোন ভাতের কেমন পুষ্টিগুণ আজকে সেটি নিয়ে লিখেছেন ডাঃ সাদিয়া মনোয়ারা ঊষা।
চলুন দেখি ভাত খেতে খেতে কি কি রোগের প্রেক্ষাপট তৈরি হতে পারে এবং কিভাবে আপনি তা প্রতিরোধ করতে পারেন?
- আমরা সাধারণত এক গ্লাস পানি নিয়ে ভাত খেতে বসি।ভাত খাওয়ার মধ্যে পানি খাবেন না । এইপানি শরীরে ঢুকে গ্যাস্ট্রিক জুসের সঙ্গে মিশে ও পাচক রসগুলোকে পাতলা করে দেয়। এতে পাচক রস বা এনজাইমগুলোর কার্যকারিতা কমে যায় শরীর পুষ্টি নিতে পারে না।খাওয়ার মধ্যে পানি খাওয়ার অভ্যাসটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে গ্যাস্ট্রিক এবং হজমের সমস্যা অনেকটাই কমে যায়।
- পাতে কাঁচা লবণ খাবেন না। লবণ ভেজে পাকা করে খাওয়ার কথা ভাবতে পারেন ।সেটাও নয় ।দরকার হয় তরকারিতে একটু বেশি করে দিন। তাও পাতে লবণ নয়। আপনি এখানে আপনার হাই প্রেসার কে চেক দিতে পারবেন।
- খেতে খেতে কথা বলা অনেকের অভ্যাস। খাবার সময় কথা বললে কিছু বাতাস মুখ থেকে পাকস্থলীতে চলে যায়। খাবার হজম হতে দেরি হয়। এছাড়া একই সাথে খাবার খেলে ও বললে খাদ্যনালী ও শ্বাসনালী দুটোই খুলে যায়। এমন মুহূর্তে যদি এক টুকরো খাবার শ্বাসনালীতে পৌঁছায় তাহলে চকিং(choking) এর মতো ঘটনা ঘটতে পারে।
- খাবারের সময় একে অপরকে সালাম দেওয়ার ব্যাপারেও শিথিলতা রয়েছে।
- আঙ্গুল চেটে খাবার কথা বলা হয়। মুখের ভিতরে লালা বা যে এনজাইমগুলো রয়েছে তারা সক্রিয় হয় এবং হজম করতে সাহায্য করে। যদিও অফিস-আদালতে সবার মধ্যে সম্ভব হয় না । ইহা নবীজির সুন্নত।
- ভাত খাওয়ার পর অন্তত ২০ কদম হাঁটাহাঁটি করা। কিন্তু আমরা ভাত ঘুম দিতে পছন্দ করে বেশি।
- খাবার ঠিক আগমুহূর্তে পেট ভরে পানি খেলে ওজন কমানোর সহজ হয় কারণ এতে বেশি খাওয়া যায় না।
- বাদামী চালের ভাত বেশি পুষ্টিকর।পান্তা ভাতের পুষ্টিমানও অনেক । বসা ভাতে পুষ্টিমান বেশি।
ডায়াবেটিস রোগীদের কখনও একবেলা এক বাটি ভাত খেতে বলা হয়। কাউকে কাউকে আবার ভাত খেতে পুরোপুরি বারণ করা হয়। এর অন্যতম কারণ ভাতের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স অনেকটাই বেশি। কোনও খাবার বা ফলে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বেশি থাকলে, ডায়াবেটিক রোগীদের এড়িয়ে যেতেই বলেন বিশেষজ্ঞরা।
ডা : সাদিয়া মনোয়ারা ঊষা খুলনা সিভিল কার্যালয়ে মেডিকেল অফিসার হিসাবে কর্মরত আছেন
এএপি