
সাত কলেজকে পৃথক বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর সংক্রান্ত অধ্যাদেশের কাজ প্রায় ৮০ শতাংশ শেষ হয়েছে এবং বাকি কাজ শেষ করে দ্রুতই অধ্যাদেশ জারি করা হবে বলে শিক্ষার্থীদের জানিয়েছে শিক্ষা উপদেষ্টার দপ্তর। এতে আশ্বস্ত হয়ে আন্দোলন কর্মসূচি আপাতত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
সাত কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর আন্দোলনের সদস্য মো. তানজিমুল আজিজ সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
সোমবার (১৩ অক্টোবর) বিকেলে সচিবালয়ে শিক্ষা উপদেষ্টার দপ্তরে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
সেখান থেকে ফিরে শিক্ষার্থী তানজিমুল আজিজ বলেন, আমরা প্রতিনিধি দল হিসেবে সচিবালয়ে গিয়েছিলাম। সেখানে শিক্ষা উপদেষ্টার পিএসসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আমাদের দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। তারা আমাদের জানিয়েছেন, অধ্যাদেশের কাজ এখন দ্বিতীয় ধাপে রয়েছে, যা কিছুটা সময়সাপেক্ষ। এই ধাপ শেষ হলেই পুরো কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে।
তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, অধ্যাদেশ প্রণয়নের অংশ হিসেবে প্রায় ছয় হাজার ই-মেইল জমা পড়েছে। প্রতিটি ই-মেইল যাচাই-বাছাই ও নথিভুক্ত করা সময়সাপেক্ষ কাজ। জনবল সংকটের কারণে আগে দুজন কর্মকর্তা এ দায়িত্বে ছিলেন, এখন আমাদের পক্ষ থেকে চাপ ও উদ্বেগ অনুধাবন করে পাঁচজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
তানজিমুল আজিজ জানান, আগামী তিন থেকে চার দিনের মধ্যে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে পরামর্শ শেষ করার পর পরবর্তী ধাপ শুরু হবে। এরপর প্রতিটি ধাপ চার দিনের মধ্যে শেষ করা সম্ভব হবে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, তাদের বক্তব্য অনুযায়ী, সবকিছু ঠিকভাবে চললে অধ্যাদেশ শিগগিরই ক্যাবিনেটে উঠবে। তবে প্রধান উপদেষ্টা ও সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টারা দেশে থাকলে প্রক্রিয়াটি আরও দ্রুত সম্পন্ন হবে। যদি কেউ সফরে থাকেন, তাহলে হয়তো কয়েকদিন দেরি হতে পারে।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে আজিজ বলেন, আমরা নিশ্চিত হয়েছি—অধ্যাদেশের ৮০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এখন শান্তিপূর্ণভাবে অপেক্ষা করলেই ফল আসবে। শিক্ষা উপদেষ্টাও আমাদের বলেছেন, আমরা যেন আন্দোলনে এমন কিছু না করি যাতে প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়।
তিনি আন্দোলনকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমাদের দাবি পূরণের কাজ প্রক্রিয়াধীন। এখন সংযত থেকে ঐক্য বজায় রাখা জরুরি।
তবে আন্দোলনের সময় কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হওয়ার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। বলেন, দুঃখের বিষয়, আমাদের এক শিক্ষক একজন শিক্ষার্থীকে আঘাত করেছেন, যার মাথায় সেলাই দিতে হয়েছে। আরও দুজন আহত হয়েছে, একজনকে ঢাকা মেডিকেলে সিটি স্ক্যান করতে হয়েছে। আমরা চাই এই ঘটনার তদন্ত হোক।
আজিজ জানান, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা এখন মানসিক ও শারীরিকভাবে কঠিন সময় পার করছেন, তবে অধ্যাদেশ প্রণয়নের অগ্রগতি দেখে তারা আশাবাদী হয়েছেন।
এর আগে, বিকেলে ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি আইন–২০২৫’ দ্রুত চূড়ান্ত ও অধ্যাদেশ জারির দাবিতে চলা অবস্থান কর্মসূচি থেকে সচিবালয়ে আলোচনা করতে যায় সরকারি সাত কলেজের ২৩ সদস্যের শিক্ষার্থী প্রতিনিধি দল।