
সংকটের মধ্যেই আরেক দফা বাড়ছে গ্যাসের দাম। দাম বাড়াতে বিতরণ সংস্থাগুলোর আবেদন পর্যালোচনা করছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। আগামী মাসে হতে পারে গণশুনানি।
তবে দাম বাড়ানোর যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশেষজ্ঞরা। আর বিতরণ সংস্থাগুলোর আকাশচুম্বী দাম বৃদ্ধির আবেদন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরীও। তিনি জানান, দাম বাড়লেও তা সহনীয় পর্যায়ে থাকবে।
রাজধানীর মগবাজারের বাসিন্দা শাবানা ইয়াসমিন। গত কয়েক বছর ধরেই তীব্র হচ্ছে গ্যাস সংকটে ভুগছেন তিনি। বাস্তবতা হলো, সংকটের তীব্রতার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দিন দিন বাড়ছে গ্যাসের খরচও জানান তিনি।
এমন অবস্থার মধ্যে আবারও শুরু হয়েছে গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়া। আবাসিকে দুই চুলায় ২ হাজার ১০০ টাকা করার আবেদন তিতাসসহ বিতরণ সংস্থাগুলোর। অন্যান্য খাতেও গ্যাসের দাম গড়ে ১১০ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন-বিইআরসিতে। যাচাই-বাছাই শেষে আগামী মাসেই হতে পারে দাম বাড়ানোর ওপর গণশুনানি। তবে এখনো যেখানে ভোগাচ্ছে গ্যাসের সংকট সেখানে বারবার নানা অজুহাতে দাম বাড়ানোর তোড়জোড়ে ক্ষোভ গ্রাহকদের।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, নিজস্ব সম্পদ অনুসন্ধান না করে আমদানিনির্ভরতাই ব্যয়বহুল আর সংকটময় করে তুলছে জ্বালানি খাতকে। এবারের দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়ার পেছনে স্পট মার্কেটে এলএনজির দাম বাড়াকে অজুহাত হিসেবে দাঁড় করাচ্ছে জ্বালানি বিভাগ। যদিও এর যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন বিশেষজ্ঞদের।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. ম. তামিম বলেন, আমদানি নির্ভরতার কারণে বিশ্ববাজারে যে মূল্যের যে ঝুঁকি এবং সরবরাহের যে ঝুঁকি এ দুটোর মধ্যে দেশ সব সময় থাকবে।
ভূতত্ত্ববিদ জ্বালানি বিশেষজ্ঞ বদরুল ইমাম বলেন, কেবল ৫ শতাংশ শর্ট মার্কেট থেকে কেনা হয়। সেটা অতি উচ্চমূল্যে কেনা হয় কিন্তু এর জন্য সামগ্রীকভাবে গ্যাসের মূল্য এতটা বৃদ্ধির কোনো যৌক্তিকরা নেই।
তবে বিতরণ কোম্পানিগুলোর আকাশচুম্বী দাম বাড়ানোর আবেদন নিয়ে ভিন্নমত রয়েছে নীতিনির্ধারকদেরও। প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টার আশ্বাস দাম বাড়লেও তা সহনীয় পর্যায়ে থাকবে।
তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, আমার মনে হয় যেসব প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে তার এত যৌক্তিকতা আছে। সরকারের তরফ থেকে তাদের প্রস্তাব খুব একটা দেখা হয় না। সুতরাং আমরা এখান থেকে একটা পলিসি নেই, আমি মনে করি না, বড় রকমের দাম সমন্বয়ের প্রয়োজন হবে, কিছু হয়তো হবে তবে গ্রহণযোগ্যই হবে ভোক্তা সাধারণের কাছে।
ব্যয়বহুল জ্বালানি এলএনজির আমদানির প্রভাবে সবশেষ ২০১৯ সালে গ্যাসের গড় দাম বাড়ানো হয়েছিল ৩৩ শতাংশ।
পিএসএন/এমঅাই