ইরানের পারমাণবিক স্থাপনার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে রাশিয়া। একই সঙ্গে ইরানে মার্কিন এই হামলাকে ‘‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’’ ও আন্তর্জাতিক আইনের চরম লঙ্ঘন বলেও অভিহিত করেছে মস্কো।
রোববার রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘যেকোনও যুক্তিই দেখানো হোক না কেন, একটি সার্বভৌম দেশের ভূখণ্ডে ক্ষেপণাস্ত্র ও বোমা হামলা চালানোর মতো এই দায়িত্বজ্ঞানহীন সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক আইন, জাতিসংঘ সনদ এবং জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবনার স্পষ্ট লঙ্ঘন।’’
বিবৃতিতে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, এই হামলা মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাতের ঝুঁকি ‘‘অত্যন্ত’’ বাড়িয়ে দিয়েছে।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সৈয়দ আব্বাস আরাঘচি রোববার মস্কো সফর করছেন। সেখানে সোমবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে তার। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘আমরা আগ্রাসন বন্ধই এবং রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক পথে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনার জন্য আরও উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানাই।’’
এদিকে, রোববার রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের উপ-চেয়ারম্যান দিমিত্রি মেদভেদেভ বলেছেন, ইরানে হামলা চালিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের জন্য নতুন যুদ্ধ শুরু করেছেন।
এর আগে, শনিবার রাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী ইরানের তিনটি প্রধান পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে বলে জানান। তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, তেহরান শান্তিতে রাজি না হলে আরও বিধ্বংসী হামলার মুখোমুখি হবে।
নিজের টেলিগ্রাম চ্যানেলে দেওয়া বিবৃতিতে মেদভেদেভ বলেছেন, শান্তির দূত হিসেবে যিনি প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন, সেই ট্রাম্প এখন যুক্তরাষ্ট্রকে নতুন এক যুদ্ধে জড়িয়ে ফেলেছেন। এ ধরনের সাফল্য নিয়ে ট্রাম্প শান্তিতে নোবেল জয় করতে পারবেন না।
রুশ লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এলডিপিআর) নেতা লিওনিদ স্লুটস্কি বলেছেন, এই হামলার কোনও সামরিক কারণ ছিল না এবং আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় এর কোনও বৈধতা নেই।
রাশিয়ার পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ স্টেট দুমার ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স কমিটির প্রধান লিওনিদ বলেন, এই উত্তেজনার ফলাফল শুধু এই অঞ্চলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। ওয়াশিংটন জানে, তেহরানের জবাব অবধারিত। এসব কিছু সংঘাতের চক্রকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে এবং তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে।