ঈদযাত্রায় অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগে ১ হাজার ২৫৫টি যানবাহন থেকে ৩৫ লাখ ২৬ হাজার ২৩৩ টাকা যাত্রীদের মাঝে ফেরত দিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দুপুরে ঢাকা সেনানিবাসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মিলিটারি অপারেশনস ডিরেক্টরেটের (স্টাফ কর্নেল) কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ঈদুল আজহাকালীন ঘরমুখো মানুষের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ও নির্বিঘ্নে যানবাহন চলাচল নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ঈদের আগে ও পরে ২ সপ্তাহের বিশেষ কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। এর অংশ হিসেবে জাতীয় মহাসড়কগুলোতে নির্বিঘ্নে যান চলাচল নিশ্চিত করতে ঢাকাসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ বাস স্ট্যান্ড, রেল স্টেশন, লঞ্চ টার্মিনাল ও মহাসড়কে দিন-রাত টহল পরিচালনা, গাড়ির অতিরিক্ত গতি নিয়ন্ত্রণের জন্য স্পর্শকাতর স্থানে চেকপোস্ট স্থাপনসহ টিকিট কালোবাজারি অথবা অধিক মূল্যে টিকিট বিক্রি রোধে সচেষ্ট ছিল।
কর্নেল শফিকুল ইসলাম বলেন, ঈদযাত্রায় অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগে ১ হাজার ২৫৫টি যানবাহন থেকে ৩৫ লাখ ২৬ হাজার ২৩৩ টাকা যাত্রীদের মাঝে ফেরত দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট বসিয়ে ১৫১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং র্যাকারের মাধ্যমে ৯টি যানবাহন উদ্ধার করা হয়।
তিনি বলেন, ঈদুল আজহায় চাঁদাবাজি/অবৈধ স্থাপনা সংক্রান্ত কারণে ৭২ জনকে গ্রেপ্তার এবং ১৪ লাখ ৫৭ হাজার ৪৩০ টাকা জব্দ করা হয়। সর্বোপরি, বিগত বছরগুলোর তুলনায় এবারে সড়ক দুর্ঘটনা, মৃত্যু ও গুরুতর আহতের হার অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে।
কর্নেল শফিকুল ইসলাম বলেন, ভুটান এবং সিঙ্গাপুর ফুটবল দল বাংলাদেশ সফরকালীন গত ৪ এবং ১০ জুন বাংলাদেশের সঙ্গে দুটি এএফসি এশিয়ান কাপ ২০২৭ কোয়ালিফায়ার ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময়ে বিদেশি খেলোয়াড়, কর্মকর্তা ও অফিসিয়ালদের বিমানবন্দরে থেকে আসা- যাওয়া, হোটেলে অবস্থান, হোটেল থেকে স্টেডিয়ামে গমনাগমন এবং খেলা চলাকালীন আয়োজক ও অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। খেলায় বাংলাদেশ ফুটবল দল ভুটানের সঙ্গে জয় লাভ করে এবং সিঙ্গাপুরের সঙ্গে প্রতিযোগিতামূলক খেলা উপহার দেয়। সেনাবাহিনী বাংলাদেশ ফুটবল দলের উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করছে।
সেনাবাহিনীর এই কর্মকর্তা আরও বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে আহতদের সুচিকিৎসা প্রদানে সেনাবাহিনী এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৬৮৩ জনকে দেশের বিভিন্ন সিএমএইচে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে, যার মধ্যে ঢাকা সিএমএইচ ১৮ জন এখনো চিকিৎসাধীন।
কর্নেল শফিকুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং কক্সবাজার জেলায় এফডিএমএন ক্যাম্প এলাকার নিরাপত্তা বিধান করার দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালন করে যাচ্ছে। সেনাবাহিনী দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখাসহ বিদেশী কূটনৈতিক ব্যক্তি ও দূতাবাসগুলোর সামগ্রিক নিরাপত্তা নিশ্চিতের কাজে নিয়োজিত রয়েছে।