
ফুল হিসেবে কদম অতি প্রাচীন। বৈষ্ণব সাহিত্য থেকে লোকগাথা, পল্লীগীতি কিংবা রবীন্দ্র-কাব্য সব জায়গায় বহুল উপমায় বিভূষিত তার গুণগাথা। কদম ফুল বর্ণে-গন্ধে-সৌন্দর্যে এ দেশের সর্বস্তরের মানুষের মন জয় করেছে বহু আগে। এদেশে শৈশবে কদম ফুল নিয়ে খেলেনি এমন মানুষ কমই পাওয়া যাবে। আবার যৌবনে প্রিয়তমার মন পেতে কদম ফুলকে ব্যবহার করেনি এমন যুবকও হয়তো হাতে গোনা । কদম আমাদের কাছে সহজলভ্য একটি ফুল হলেও আমরা এর গুনাগুন সম্পর্কে কম জানি। আর তাই আজ আমরা জেনে নেব কদমের ফুল, পাতা, বাকলের কিছু গুনাগুন।
১.শিশুদের কৃমির উপদ্রবে:
সাধারণত ৪-৫ বছরের শিশুদের ক্ষেত্রে ২০০ মি.লি. কচি কদম পাতার রস দিনে একবার খাওয়াতে হবে। উপদ্রব না কমলে সকালে-বিকালে দু’বার করে খাওয়ালে সপ্তাহখানেকের মধ্যে উপকার পাওয়া যাবে। বয়স অনুপাতে পাতার রসের পরিমাণ বাড়াতে হবে।
২.মুখের দূর্গন্ধ সরাতে:
মুখের দুর্গন্ধ সরাতে কদম ফুল কুঁচিয়ে পানিতে সেদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে কুলকুচা করতে হবে। এতে দুর্গন্ধ দূর হবে।
৩. টিউমারের ব্যাথা উপশমে :
কদমের কচি পাতা চন্দনের মতো বেটে সাধ্যমতো গরম করে টিউমার প্রলেপ দিলে ফোলা ও ব্যথা দুয়েরই উপশম হয় বলে আয়ুর্বেদ চিকিৎসকগণ দাবি করেন।
৪.চক্ষু প্রদাহ উপশমঃ
কদম ছালের গুঁড়া, অফিম ও ফিটকিরি সমপরিমাণ মিশিয়ে চোখের চারদিকে প্রলেপ দিলে চক্ষু প্রদাহ দূর হয় ।
৫.পিপাসা দূরীকরনে:
প্রবল জ্বরে পিপাসাও প্রবল হয়ে থাকে। এমন অবস্থায় কদম ফলের রস খাওয়ালে পিপাসা দূর হয়।
৬. মুখের ক্ষত কমাতে :
মুখে ঘা বা ক্ষত হলে কদম পাতার ক্বাথ মুখে নিয়ে কুলি করলে সেরে যাবে। পচা ঘা বা ক্ষত ট্যানিনের সংস্পর্শে এলে ক্ষত কোষ অধঃক্ষেপিত হয়ে পাতলা আবরণের সৃষ্টি করে ও ক্ষত সারিয়ে তোলে।
৭.ম্যালেরিয়া চিকিৎসায়:
কদমে কুেইনোভিক এসিড(quinovic acid)এবং সিনকোট্যানিক এসিড (cinchotannic acid) থাকার জন্য এটি ম্যালেরিয়া চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।
৮.কোষ বৃদ্ধিতে:
অনেকেই কদম পাতা দিয়ে বাধা হয়ে থাকেন।কারন গাছের ছাল বেটে ত্বকে লাগিয়ে ,কদম পাতা দিয়ে বাধা হয়ে থাকলে, ত্বকের বৃদ্ধি অর্থাৎ ফোলা কমে যায়।
৯.শিশুর বমি কমাতে:
কদমের ত্বকের রস জরাচূর্ন ওচিনির সাথে মিশিয়ে খেলে বমি নিবারিত হয়।
১০.শক্তি বৃদ্ধি:
কদম ছালের রস জ্বর নাশক ও বল বৃদ্ধিকারক।
এএপি/এসই