
পুলিশ সপ্তাহের পঞ্চম দিনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের কাছে নিজেদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া তুলে ধরেছেন এ বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। বাহিনীটির পক্ষ থেকে তুলে ধরা দাবিগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো, কাগজে-কলমে পুলিশ অধিদপ্তর নয়, পুলিশ হেডকোয়ার্টার হিসেবে লিখতে চান তারা।
শনিবার (৭ জানুয়ারি) রাতে রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইনে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে এ দাবি তুলে ধরা হয়। এছাড়া আইজিপির র্যাংক ব্যাচ ফোর স্টার করা, পুলিশ হাসপাতালকে মেডিকেল কলেজ করা, বঙ্গবন্ধু ইউনিভার্সিটি অব পুলিশ অ্যান্ড ক্রিমিনাল জাস্টিস নামে পুলিশের জন্য বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় করাসহ বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন তারা।
অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, চাকরিরত অবস্থায় পুলিশ সদস্য মারা গেলে ক্ষতিপূরণ…। এটাও যৌক্তিক দাবি। সিনিয়র সচিব এটার ব্যবস্থা নেবেন।
তিনি বলেন, আমরা মনে করি সাইবার জগতটা আমাদের জন্য নতুন জগৎ। অপরাধীরা এ জায়গাটা অত্যন্ত সক্রিয়। এ জায়গাটা আমাদের অনেক কিছু করতে হবে। আমাদের সাইবার ইউনিট আরও বেশি শক্তিশালী করতে হবে। নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি এসেছে। যতবেশি আমরা পুলিশকে প্রশিক্ষণ দিতে পারবো ততবেশি দক্ষ পুলিশ বাহিনী তৈরি হবে। এ দাবিটাও যৌক্তিক দাবি।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালকে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রূপান্তর করার জন্য দাবি এসেছে। আপনাদের হাসপাতালটা একটা ভালোমানের হাসপাতালে রূপান্তরিত হয়েছে। এটাকে আপনারা কলেজের রূপান্তরিত করতে চান। আপনারা বিষয়টা আর একটু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বলবেন। কারণ আমাদের যে পরিমাণ মেডিকেল কলেজ আছে, কোন কোন মেডিকেল কলেজে তো শিক্ষকই নেই। এ বিষয়টা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আমাদের সচিব দেখবেন। প্রত্যেক বিভাগে একটা করে আধুনিক হাসপাতাল হবে এটাও আমি যৌক্তিক দাবি মনে করি।
তিনি বলেন, আমাদের যানবাহনের প্রয়োজন রয়েছে। আমাদের পুলিশের সব জায়গায় যাওয়া লাগে তাই যানবাহনের প্রয়োজন রয়েছে। যানবাহনের এবারও আমাদের বাজেট ছিল। করোনার পরিস্থিতির মধ্যেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হয়েছে। যানবাহনের করাকরি আরোপ রয়েছে। আশা করছি, অচিরে এ সমস্যার সমাধান হবে।
পুলিশের দাবির বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, পঞ্চম গ্রেডের কর্মকর্তাদের বদলি ও পদোন্নতি পুলিশ হেডকোয়ার্টার কর্তৃক সম্পাদন করার কথা বলা হয়েছে। এটাও আমাদের সচিব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখবেন। এটা কীভাবে আরও সুন্দর করা যায় এবং যুগউপযোগী করা যায় তিনি দেখবেন। মন্ত্রণালয়ে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স নামটি ব্যবহার করার জন্য…। এটা বলা যেতেই পারে এখানে কোনো সমস্যা নেই। কেন বলা হয় না এটা আমি নিজেও জানিনা। সিনিয়র সচিবকে বলবো আপনি এটার ব্যবস্থা নেবেন। পুলিশে কর্মরত সিভিল স্টাফদের অবসরকালীন রেশন সুবিধা অন্য বাহিনী পায় কিনা চেক করে দেখবো।
তিনি বলেন, আপনাদের দাবিগুলোর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের প্রয়োজন। আমরা আলোচনা করে আপনাদের যৌক্তিক দাবিগুলো রাখার চেষ্টা করবো।
আরেকটি দাবি এসেছে, আমাদের আইজিপিকে সিনিয়র সচিব…। যেখানে আমরা বলছি, সিনিয়র সচিব সেখানে তাকে সিনিয়র সচিব ঘোষণা দিতে বিলম্ব কেন আমার জানা নেই। যেগুলো কনফার্ম রয়েছে সেগুলো যেন তারা দ্রুত ভোগ করতে পারেন সেদিকে আমাদের লক্ষ্য রাখা উচিত। তবে, আপনাদের গতি যেন কমে না যায়, আমরা সচেষ্ট আছি। আমরা যৌক্তিক দাবিগুলোর বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেবো।
বিজ্ঞাপন
আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।