কৈয়া-রায়েরমহল সড়কের নির্মাণ কাজে অনিয়ম ও দুর্নীতি তদন্তে মাঠে নেমেছে খুলনা দুর্নীতি দমন কমিশন। গতকাল রবিবার খুলনার দুদকের সহকারী পরিচালক রকিবুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি টিম ওই রাস্তায় সরেজমিনে যায়। ওই রাস্তার কাজে ব্যবহার করা নানা নির্মাণ সামগ্রীর নমুনা সংগ্রহ করেন। রাস্তার দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও কার্পেটিং এর স্তর মাপা হয়েছে। ল্যাবে এসব নমুনা পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। এছাড়া খুলনা এলজিইডি, ডুমুরিয়া ও বটিয়াঘাটা উপজেলা ইঞ্জিনিয়ারের দপ্তর থেকে ১১ কোটি টাকা ব্যয়ের সকল তথ্যাদি নেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে দুদকের সহকারী পরিচালক রকিবুল ইসলাম বলেন, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় এ রাস্তার অনিয়ম ও দুর্নীতির খবর প্রচার হওয়ায় দুদক বিষয়টি তদন্ত করছে। রবিবার আমরা এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রতিনিধি এ রাস্তার নমুনা নিয়েছি। অনেক বিষয়ে মাপও নেওয়া হয়েছে। এসব ল্যাবে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হচ্ছে। সকল ডকুমেন্ট সংগ্রহ করা হয়েছে।
খুলনা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ কামরুল ইসলাম সরদার বলেন, ওই রাস্তায় ওভারলোডিং যানবাহন চলাচল করায় রাস্তার এ বেহাল দশা। দুদককে কাজের এস্টিমেটের কপি দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধদিপ্তরের (এলজিইডি) আওতায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জিওবি অর্থায়নে কৈয়া বাজার থেকে রাজবাঁধ পর্যন্ত ২ দশমিক ১ কিলোমিটার রাস্তায় কাজে বরাদ্দ হয় ৩ কোটি টাকা। আর রাজবাঁধ কালভার্ট থেকে ফলইমারী পর্যন্ত ৬০০ মিটার কাজে বরাদ্দ হয় ৮০ লাখ টাকা।
এর আগে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ‘ঘূর্ণিঝড় আম্পান ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ পল্লী সড়ক অবকাঠামো পুনর্বাসন’ প্রকল্পের অধীনে একই সড়কে (মোস্তর মোড় হতে কৈয়া বাজার অভিমুখি) রাস্তায় ৩.২ কিলোমিটার সংস্কারে বরাদ্দ ছিল ৭ কোটি ৩৭ লাখ ৫৯ হাজার টাকা।
১১ কোটি টাকা ব্যয়ে কার্পেটিংয়ের কাজ শেষ না হতেই কৈয়া-মোস্ত’র মোড় সড়ক চলাচল অনুপোযোগি হয়ে পড়ে। অনেক জায়গায় নেই কার্পেটিং, খোয়া ও বালির চিহ্ন। খানাখন্দ ও বড় বড় গর্তে জমা পানি দেখে মনে হচ্ছে রাস্তায় খুড়ে রাখা হয়েছে সারি সারি ছোট ছোট পাত কুয়ো। নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার, বটিয়াঘাটা উপজেলা ইঞ্জিনিয়ারের মোটা অংকের ঘুষ গ্রহণ এবং ওভার লোডিং পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল করায় এ রাস্তার এখন বেহাল। নির্মাণের শুরু থেকে এ রাস্তার অনিয়ম দুর্নীতি ও বেহাল দশা নিয়ে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করে আসছে খুলনা গেজেট। গত ১৯ অক্টোবর সর্বশেষ একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
