
ক্রেমলিনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ। ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে মস্কোর সঙ্গে ওয়াশিংটনের তীব্র টানাপড়েনের মাঝে বুধবার ক্রেমলিনে পৌঁছেছেন মার্কিন বিশেষ দূত।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানে রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তিতে পৌঁছানো নিয়ে মস্কোর ওপর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চাপ বাড়ছে। ট্রাম্পের বেঁধে দেওয়া নির্ধারিত সময়সীমার আগে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছানো নিয়ে আলোচনার জন্য বুধবার মস্কো সফরে গেছেন উইটকফ।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ইউক্রেনের সঙ্গে ‘ভয়াবহ যুদ্ধ’ বন্ধে পদক্ষেপ না নিলে রাশিয়ার ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। একই সঙ্গে যারা রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য চালিয়ে যাবে, তাদের ওপরও ‘সেকেন্ডারি নিষেধাজ্ঞা’ আরোপ করা হতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন তিনি।
এদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়া কেবল তখনই শান্তির ব্যাপারে গুরুত্ব দেবে, যখন তারা অর্থনৈতিক সংকটে পড়বে। রাশিয়ার তেলের ক্রেতা দেশগুলোর ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা ও শুল্ক আরোপের হুমকিকে স্বাগত জানিয়েছেন তিনি।
তবে আগামী শুক্রবারের মাঝে রাশিয়া-ইউক্রেনের মাঝে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছানোর সম্ভাবনা ক্ষীণ। কারণ ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞার হুমকি সত্ত্বেও ইউক্রেনে ব্যাপক আকারে বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া।
এর আগে, তুরস্কের ইস্তাম্বুলে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে তিন দফার আলোচনায় যুদ্ধ অবসানের বিষয়ে কোনও অগ্রগতি দেখা যায়নি। মস্কোর সামরিক ও রাজনৈতিক বিভিন্ন শর্ত কিয়েভ ও তার পশ্চিমা মিত্ররা মেনে নেয়নি। এছাড়া পুতিন ও জেলেনস্কির মাঝে সরাসরি বৈঠকের জন্য কিয়েভ একাধিকবার আহ্বান জানালেও ক্রেমলিন তা প্রত্যাখ্যান করেছে।
অন্যদিকে, মঙ্গলবার জেলেনস্কির সঙ্গে ট্রাম্পের ফোনালাপের পর ইউক্রেনে অতিরিক্ত ২০০ মিলিয়ন ডলারের সামরিক সরঞ্জাম বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ওই ফোনালাপে যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেনের দ্বিপাক্ষিক প্রতিরক্ষা সহযোগিতা ও ড্রোন উৎপাদন নিয়েও আলোচনা করেছেন তারা।
বর্তমানে ড্রোন ব্যবহার করে রাশিয়ার তেল শোধনাগার ও জ্বালানি অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে ইউক্রেন। আর ইউক্রেনের বিভিন্ন শহর লক্ষ্য করে বড় ধরনের পাল্টা হামলা করছে মস্কো।
কিয়েভ শহরের সামরিক প্রশাসন বলেছে, গত সপ্তাহে কিয়েভে রুশ বাহিনীর হামলায় আহত এক ব্যক্তির প্রাণহানি ঘটেছে। ফলে এ নিয়ে গত কয়েক দিনে কিয়েভে রাশিয়ার নতুন হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩২ জনে পৌঁছেছে। রাশিয়ার সামরিক আগ্রাসন শুরুর পর কিয়েভে এটিই সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলা বলে দাবি করেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।