
খুলনায় অপহরণের দীর্ঘ সাড়ে ৫ ঘণ্টা পর খাদ্য পরিদর্শক সুশান্ত কুমার মজুমদারকে উদ্ধার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকা সন্দেহে পুলিশ দুই জনকে আটক করেছে।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) খন্দকার হোসাইন আহমদ জানান, খাদ্য পরিদর্শক সুশান্ত কুমার মজুমদারকে অপহরণ ঘটনায় তার স্ত্রীয় মাধবী রানী মজুমদার বাদী হয়ে খুলনা সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। অপহরনের সাড়ে ৫ ঘন্টা পর ভিক্টিমকে উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্ট আলমগীর কবির (৩০) ও মুছা খান (৩২) নামের দুইজনকে আটক করা হয়েছে।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গতকাল রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে কয়েকজন ব্যক্তি নিজেদের পুলিশ পরিচয় দিয়ে নগরীর ৪ন নম্বর ঘাট এলাকা থেকে একটি ট্রলারে জোর করে সুশান্ত কুমার মজুমদারকে তুলে নিয়ে যায়। অপহরণের পর পরিবারের কাছে ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে চক্রটি। এ ঘটনায় খাদ্য কর্মকর্তার স্ত্রী মাধবী রানী মজুমদার রাতেই খুলনা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
তিনি অভিযোগে উল্লেখ করেন, পুলিশের লোক পরিচয় দিয়ে মো. রেজা ও বাবু মণ্ডল নামের দুই ব্যক্তি এবং আরও তিনজন মিলে তার স্বামীকে হাতকড়া পরিয়ে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়। ট্রলারে ওঠানোর পর মারতে মারতে তারা ট্রলারটি জেলখানা ঘাটের দিকে নিয়ে যায়। অপহরণের পর তার ব্যবহৃত দুটি মুঠোফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। বাবু মণ্ডল এর আগে তার স্বামীর কাছে একাধিকবার টাকা দাবি করেছিলেন। তবে সুশান্ত কুমার তাতে রাজি হননি।
খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাওলাদার সানওয়ার হুসাইন মাসুম বলেন, অপহরণের পর থেকে পুলিশের একাধিক টিম চারদিক থেকে অভিযান শুরু করে। পুলিশের অভিযানে আতঙ্কিত হয়ে অপহরণকারীরা তাকে তেরখাদা উপজেলার আজগড়া গ্রামের বিআরবি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে হাত-পা এবং চোখ বেঁধে ফেলে রেখে যায়। পরবর্তীতে সেখানকার পুলিশের সহায়তা নিয়ে সুশান্ত কুমার মজুমদারকে উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে থানায় এনে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। রাত আড়াইটার দিকে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তিনি ভালো আছেন।
ওসি বলেন, অপহরণকারীরা সুশান্ত কুমার মজুমদারের কাছে চাঁদা দাবি করেছিল। তার স্ত্রী মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ২০ হাজার টাকা ও এক বন্ধু ২৫ হাজার টাকা দিয়েছে। পরে ওই মোবাইল ব্যাংকিংয়ের এজেন্ট আলমগীর কবির এবং পরবর্তীতে মুছা খানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তেরখাদা থানার ওসি মেহেদী হাসান বলেন, রাত সাড়ে ১২টার দিকে তেরখাদা থানা পুলিশের সহায়তায় খুলনা থানা পুলিশ ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। তবে কি কারণে তাকে অপহরণ করা হয়েছিল তিনি সঠিকভাবে বলতে পারেননি।