
সংবাদ প্রতিবেদন:
খুলনা, সোমবার (বিএসএস): খুলনা আয়কর অঞ্চল ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ১১,১১,৯৯১ জন করদাতার কাছ থেকে মোট ৩,৯৯০.০৮ কোটি টাকা আয়কর আদায় করেছে, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ৪২৩.৩৫ কোটি টাকা বেশি।
খুলনা কর অঞ্চল ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ২২টি সার্কেল থেকে ৫,৫১০ কোটি টাকার আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল।
এর আগে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৯,৯২,৫৫২ জন করদাতার কাছ থেকে ৩,৫৬৬.৭৩ কোটি টাকা আয়কর আদায় করা হয়েছিল, যেখানে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫,০০০ কোটি টাকা।
খুলনা কর অঞ্চলের উপ-কর কমিশনার দিলোয়ারা জাহান বিএসএস-কে জানান, “চলতি অর্থবছরের প্রবৃদ্ধি উল্লেখযোগ্য। করজালের পরিধি বাড়াতে বিভিন্ন প্রণোদনামূলক ক্যাম্পেইন চালানো হয়েছে।”
তিনি বলেন, “আমরা ৫,৫১০ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিলাম, তবে এখন পর্যন্ত ৩,৯৯০.০৮ কোটি টাকা আদায় হয়েছে, যা ৩.৭৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নির্দেশ করে।”
২০২৪-২৫ অর্থবছরে কর রিটার্ন জমা পড়েছে মোট ৪,০৯,৯৪৪টি, যা আগের বছরের তুলনায় ২০,২৪৫টি বেশি। উপ-কমিশনার জানান, IBAS (ইন্টিগ্রেটেড বাজেট ও হিসাব সিস্টেম)-এ চূড়ান্ত হিসাব প্রদানের কারণে আয়কর আদায়ের অঙ্ক কিছুটা বাড়তে পারে এবং তা ৪,০০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে দিলোয়ারা জাহান বলেন, “পূর্ববর্তী সরকারের সময়ে ৫,০০০ কোটির বেশি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ বাস্তবসম্মত ছিল না। রাজনৈতিক অস্থিরতা, বৈশ্বিক সংঘাত, বিশেষ করে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব বিবেচনায় নেওয়া হয়নি।”
আয়কর বিশেষজ্ঞরা বলেন, অনেক টিআইএনধারী নিয়মিত কর না দিয়েও বিভিন্ন সনদ সংগ্রহ করছে, যা একটি বড় সমস্যা। নিয়মিত কর প্রদান নিশ্চিত করতে টিআইএনধারীদের জন্য নতুন বিধিনিষেধ প্রয়োজন।
এছাড়াও এনবিআর আয়কর মেলা আয়োজনসহ নানা উদ্যোগ নিয়েছে স্পট অ্যাসেসমেন্টের মাধ্যমে কর আদায় বাড়াতে। তবে তাতেও লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হয়নি বলে তারা মনে করেন।
খুলনা কর অঞ্চলে পাঁচটি বিভাগে ৭৭ জন দীর্ঘমেয়াদি ও সর্বোচ্চ করদাতাকে সম্মাননা দেওয়া হয়েছে বলে জানান কর্মকর্তারা। তবে এবছরও একইভাবে করদাতা সংবর্ধনা অনুষ্ঠান হবে কি না তা এখনো নির্ধারিত হয়নি।
দিলোয়ারা জাহান বলেন, “খুলনা, যশোর, মাগুরা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট ও ঝিনাইদহ—এই জেলাগুলোতে পাটকল, চিংড়ি কারখানা ও ইটভাটাসহ বড় শিল্প-কারখানা রয়েছে, যার ফলে কর আদায়ে ধারাবাহিকভাবে প্রবৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে। ই-টিআইএন রেজিস্ট্রেশন এবং কর কর্মকর্তাদের সঙ্গে করদাতাদের সুসম্পর্ক এ প্রবৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে।”