
ইসরায়েলের দুই বছরের যুদ্ধে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার মোট ভবনের ৮০ শতাংশেরও বেশি ধ্বংস অথবা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মঙ্গলবার জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি ধ্বংসযজ্ঞের এই পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে।
বর্তমানে গাজা উপত্যকা পুনর্গঠনের চাহিদা নিরূপণে কাজ করছে জাতিসংঘের এই উন্নয়ন কর্মসূচি। সংস্থাটি বলেছে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর হামলায় পুরো গাজা উপত্যকার ৮০ শতাংশের বেশি ভবন ধ্বংস অথবা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে গাজা নগরীতে ধ্বংসযজ্ঞের এই হার ৯২ শতাংশ।
জেনেভায় ইউএনডিপির একজন মুখপাত্র ইসরায়েলি এই ধ্বংসযজ্ঞকে ‘‘বিধ্বংসী’’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। সংস্থাটির হিসাব অনুযায়ী, গাজা উপত্যকা পুনর্গঠনের আগে সেখান থেকে অন্তত ৫ কোটি ৫০ লাখ টন ধ্বংসাবশেষ অপসারণ করতে হবে।
ইউএনডিপি বলেছে, তারা ধ্বংসাবশেষ অপসারণের কিছু কাজ শুরু করেছে। তবে অবিস্ফোরিত গোলাবারুদ অপসারণ কাজ বাধাগ্রস্ত করছে। সংস্থাটি বলেছে, উপত্যকায় ধ্বংসাবশেষের নিচ থেকে প্রায়ই মরদেহ পাওয়া যাচ্ছে। এসব মরদেহের পরিচয় শনাক্ত এবং সংরক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং বিশ্বব্যাংকের যৌথ হিসাব অনুযায়ী, গাজা উপত্যকাকে আবারও বসবাসযোগ্য করে তোলার জন্য কমপক্ষে ৭০ বিলিয়ন ডলারের প্রয়োজন হবে।
এদিকে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস বলেছেন, গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পর থেকে সেখানে স্বাস্থ্যসেবাবিষয়ক কার্যক্রম বাড়িয়ে দিয়েছে ডব্লিউএইচও।
উপত্যকার হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা সহায়তা জোরদারে জরুরি চিকিৎসক দল পাঠিয়েছে জাতিসংঘের এই স্বাস্থ্য সংস্থা। এছাড়া আটটি ট্রাকে করে ইনসুলিন, ল্যাবের উপকরণ ও জরুরি ওষুধসহ বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা সরঞ্জাম পাঠিয়েছে সংস্থাটি।
টেড্রোস বলেন, গাজার স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে পুনর্গঠন করতে হবে। এই সংকট আমাদের গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে আরও ভালোভাবে গড়ে তোলার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। আর সেই চিকিৎসাব্যবস্থা হবে আরও শক্তিশালী, ন্যায়সঙ্গত ও মানুষের প্রয়োজনকেন্দ্রিক একটি ব্যবস্থা।
তিনি বলেন, শান্তিই সবচেয়ে কার্যকর ওষুধ।