
৫৫ বছর আগে জাতিসংঘের পরমাণু প্রকল্প পর্যবেক্ষণ সংস্থা (আইএইএ)-এর সঙ্গে যে চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল ইরান, তা পুনর্বিবেচনা করা হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সৈয়দ আব্বাস আরাগচি। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল আরাবি আল জাদিদকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ ইস্যুতে তেহরানের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন সৈয়দ আরাগচি।
সাক্ষাৎকারে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমাদের পরমাণু স্থাপনায় যে হামলা ঘটল— তার গুরুতর এবং গভীর প্রভাব নিশ্চিতভাবেই তেহরানের ভবিষ্যৎ কার্যক্রমে পড়বে। আমরা জাতিসংঘের নন-প্রোলিফারেশন ট্রিটি বা এনপিটি চুক্তির অন্যতম অংশীদার; কিন্তু এই অংশীদারিত্ব ভবিষ্যতেও থাকবে কি না তা পুনর্বিবেচনা করার সময় এসেছে এবং আমরা তা করব।”
১৯৭০ সালে আইইএ’র সঙ্গে এনপিটি চুক্তি করেছিল ইরান। সে সময় অবশ্য বর্তমান ইসলাপন্থি শাসকগোষ্ঠী শাসনক্ষমতায় ছিল না। ইরানের সর্বশেষ রাজা বা শাহ রেজা পাহালভী তখন ইরানের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান ছিলেন।
আইএইএ-এর সঙ্গে এএনপিটি চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে ইরান প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে দেশটি কখনও পরমাণু অস্ত্র তৈরি করবে না এবং আইএইএ-কে সহযোগিতা করবে।
গত ৬ জুন আইএইএ এক বিবৃতিতে জানিয়েছিল— ইরান যে মাত্রার বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম মজুত করেছে, তা দিয়ে অনায়াসেই পরমাণু বোমা বানানো সম্ভব। আইএইএ এই বিবৃতি দেওয়ার এক সপ্তাহের মাথায় ১৩ জুন দিবাগত রাতে ইরানে বিমান অভিযান ‘দ্য রাইজিং লায়ন’ শুরু করে ইসরায়েল। অভিযান শুরুর কিছুক্ষণ পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এক ভিডিওবার্তায় বলেছিলেন, জাতিসংঘের পরমাণু সংস্থার বিবৃতিতে আমলে নিয়ে এ অভিযান শুরু হয়েছে।
ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর গত ১৬ জুন ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘাই এক ব্রিফিংয়ে বলেছিলেন, “ইরানে ইসরায়েলি হামলার ক্ষেত্র প্রস্তুত করে দিয়েছে আইএইএ।”
ইরানের পার্লামেন্ট মজলিশে আজ বুধবার একটি বিল পাস হয়েছে। সেই বিলে আইএইএ-এর সঙ্গে সম্পর্ক স্থগিতে সম্মতি দিয়েছেন অধিকাংশ এমপি।
এই বিল অবশ্য চূড়ান্ত কিছু নয়; কারণ ইরানের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট যে কোনো ইস্যুতে দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত এবং তিনি এখন পর্যন্ত এ ইস্যুতে কোনো সিদ্ধান্ত জানাননি।