জামায়াত ইসলামী সংশ্ষ্টিদের রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন চাওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) বেগম রাশেদা সুলতানা। জামায়াত অন্য নামে আসছে কিনা তা প্রমাণসাপেক্ষ বিষয় বলেও মনে করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) নির্বাচন ভবনের নিজ দফতরে সাংবাদিকদের সামনে এসব কথা বলেন এই নির্বাচন কমিশনার।
এর আগে সকালে জামায়াত সংশ্লিষ্ট কোনো দলকে ইসির নিবন্ধন না দিতে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সন্তানদের সংগঠন ‘প্রজন্ম ৭১’ প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বরাবর একটি স্মারকলিপি দেয়।
নতুন করে ইসির নিবন্ধন পেতে এবার ৯৮টি দল আবেদন করেছে। এদের মধ্যে দুই-চারটি ছাড়া অনেকগুলোর নামও কখনো শোনা যায়নি। অদ্ভুত সব অনেক রাজনৈতিক দল গড়া নিয়ে বেশ সমালোচনাও হয়েছে। এদের বেশিরভাগেরই নেই রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, নেই নিজেদের কোনো অফিসও।
এসব দলের মধ্যে একটি হলো এবি পার্টি। যার নেতৃত্বে জামায়াতের সাবেক কয়েকজন নেতা রয়েছেন। অন্যদিকে বাংলাদেশে ডেভেলপমেন্ট পার্টি নামে আরেকটা দল আবেদন করেছে। তাদের বিরুদ্ধে জামায়াতের হয়ে অন্য নামে নিবন্ধন চাওয়ার অভিযোগ আছে।
নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘অন্য নামে যদি জামায়াত নির্বাচন কমিশনে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন চেয়ে থাকে, তাহলে আমরা পাঁচ কমিশনার বসে সিদ্ধান্ত নেব। কারণ আদালতের আদেশে জামায়াতের রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল হয়েছিল।’
এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘আদালতের রায়ে নিবন্ধন বাতিল হওয়া জামায়াত ইসলামীর সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা নতুন নামে নিবন্ধন চাইলে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এক্ষেত্রে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর আইনে কোনো নির্দেশনা থাকলে পাঁচ কমিশনার বসে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
স্মারকলিপি পাওয়ার বিষয়টি জানিয়ে রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘প্রজন্ম একাত্তর স্মারকলিপি দিয়েছে গেছে। সেখানে কী আছে সে বিষয়ে পরিষ্কারভাবে জানা নেই। আগে দেখব জানব তারপর বলতে পারব। আমরা এটুকু জানি, আইনে নির্দিষ্ট শর্ত আছে। এই শর্তগুলো পূরণ করলেই কেবল কোনো দল নিবন্ধন পায়।’
নির্বাচন কমিশনার রাশেদা আরও বলেন, ‘জামায়াত অন্য আদলে আসছে কি না, তা আগাম বলা ঠিক হবে না। কমিশন মিটিংয়ে ফরমালি না এলে বলা যাবে না। জামায়াতই আসছে এগুলো প্রমাণ হোক, তারপর আমরা পাঁচ কমিশনার বসে সিদ্ধান্ত নেব।’
নিবন্ধনে শর্ত পূরণ করলে জামায়াত সংশ্লিষ্টদের নিবন্ধন পেতে বাধা আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘জামায়াত আদালতের আদেশ অনুযায়ী নিষিদ্ধ পার্টি। নিষিদ্ধ মানে নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে। যেহেতু নিবন্ধন নেই, নির্বাচনে তারা আসতে পারবে না। এখন নতুন করে তারা কীভাবে আসছে না আসতে চাইছে এগুলো খতিয়ে না দেখে বলা যাবে না। আইনের মধ্যে যদি থাকে, আর যদি না থাকে তখন কমিশন বসে সিদ্ধান্ত নেবে। এ বিষয়ে আগাম মন্তব্য করার জায়গা নেই।’
আলোচনায় থাকায় বাংলাদেশে ডেভেলপমেন্ট পার্টির বিষয়ে অভিযোগ এরা জামায়াতের পক্ষে নিবন্ধন চেয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেন, তারা দরখাস্ত দাখিল করেছে, আর অন্যরা বলছেন ওনারা অন্য নামে দিয়েছেন, সেটা তো প্রমাণের বিষয়। আগে যাচাই-বাছাই হোক, তখন বলা যাবে। আমরা কেবল এই দল নয়, ৯৩টি পার্টির ব্যাপারেই যাচাই-বছাইয়ে যতখানি আইনি কঠামো আছে পুরোটাই দেখব। গঠনতন্ত্র যাচাই করেই নিবন্ধন দেওয়া হবে। একজন এসে দাঁড়াল আমরা একটা দল, তাই কী হবে নাকি। তাই তো আর হবে। যাচাই বাছাই করেই নিবন্ধন দেব।
