ভালো শুরুর পর পথ হারিয়ে ফেলল নেদারল্যান্ডস। প্রথম তিন ব্যাটসম্যান ছাড়া কেউ যেতে পারলেন না দুই অঙ্কের ঘরে। দুইশ পার হতেই থেমে গেল দলটির ইনিংস। অল্প পুঁজি নিয়ে লড়াই করলেন তাদের বোলাররা, সম্ভাবনা জাগালেন ওয়েস্ট ইন্ডিজদের বিপক্ষে অসাধারণ কিছুর। তবে তাদের সেই আশা গুঁড়িয়ে ক্যারিবিয়ানদের জয় এনে দিলেন ব্র্যান্ডন কিং ও কেসি কার্টি।
আমস্টেলভিনে বৃহস্পতিবার (২ জুন) দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয় ৫ উইকেটে। ডাচদের ২১৪ রানে গুটিয়ে দিয়ে ২৭ বল বাকি থাকতে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় সফরকারীরা। স্থায়ীভাবে সাদা বলের নেতৃত্ব পেয়ে নিকোলাস পুরানের শুরুটা হলো দুর্দান্ত। এক ম্যাচ বাকি থাকতেই তিন ম্যাচের সিরিজটি জিতে নিল তার দল। অর্জন করল আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ সুপার লিগে মূল্যবান আরও ১০ পয়েন্ট।
রান তাড়ায় ৯৯ রানে ৫ উইকেট হারানো ক্যারিবিয়ানরা শেষ পর্যন্ত সহজেই লক্ষ্যে পৌঁছায় কিং ও কার্টির দৃঢ়তায়। ষষ্ঠ উইকেটে তারা গড়েন অবিচ্ছিন্ন ১১৮ রানের জুটি। ক্যারিয়ার সেরা ৯১ রানের ইনিংস খেলে দলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন কিং। তার ৯০ বলের ইনিংসটি সাজানো ৩ ছক্কা ও ৯ চারে। মাত্র দ্বিতীয় ওয়ানডে খেলতে নামা কার্টি এক ছক্কা ও ২ চারে করেন ৪৩।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে পঞ্চম ওভারেই দুই ওপেনারকে হারাতে পারত ডাচরা। কাইল মেয়ার্সের বলে মিড-অনে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যান ৩ রানে থাকা ম্যাক্স ও’ডাওড আর ৭ রানে থাকা বিক্রমজিত সিংয়ের ক্যাচ স্লিপে ধরতে পারেননি এনক্রুমা বনার। জীবন পেয়ে দলকে এগিয়ে নেন তারা। ৬৭ রানে জুটি ভাঙার সুযোগ পেয়েছিল ক্যারিবিয়ানরা। এবার ২৭ রানে থাকা ও’ডাওডের ক্যাচ ছাড়েন মেয়ার্স।
শেষ পর্যন্ত নেদারল্যান্ডসের উদ্বোধনী জুটি ভাঙে ১০১ রানে। লেগ স্পিনার হেইডেন ওয়ালশকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৫৮ বলে এক ছক্কা ও ৫ চারে ৪৬ রান করা বিক্রমজিত। পরপর দুই ম্যাচে ফিফটির দুয়ার থেকে ফিরলেন তিনি। ৭৪ বলে ফিফটি করা ও’ডাওডকে ৫১ রানে বোল্ড করে দেন আকিল। ডাচ ওপেনারের ইনিংসটি গড়া এক ছক্কা ও ৩ চারে।
এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে নেদারল্যান্ডস। তিনে নেমে এক প্রান্ত আগলে রেখে লড়াই চালিয়ে যান স্কট এডওয়ার্ডস। ৬৬ বলে ফিফটি করা টপ অর্ডার এই ব্যাটসম্যানের সৌজন্যেই দুইশ পার করতে পারে স্বাগতিকরা। ৮৯ বলে ৬৮ রানের ইনিংস খেলে শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন এডওয়ার্ডস। ইনিংসে মাত্র একটি চার মারেন তিনি। নেদারল্যান্ডসের হয়ে শেষ ৮ ব্যাটসম্যানের কেউই যেতে পারেননি দুই অঙ্কে।
ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ৩৯ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন আকিল। বাঁহাতি এই স্পিনারের আগের সেরা ছিল ২৬ রান খরচায় তিন উইকেট।
রান তাড়ায় শুরুতেই চাপে পড়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। একশ রানের আগে হারিয়ে ফেলে তারা পাঁচ উইকেট। ষষ্ঠ ওভারে বিদায় নেন শামারা ব্রুকস। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান শেই হোপকে ১৮ রানে বোল্ড করে দেন বাস ডে লেডে। টিকে থাকার লড়াই চালিয়েও সফল হননি এনক্রুমা বনার ও নিকোলাস পুরান। ২ চারে ২২ রান করা মেয়ার্সকে ফেরান অভিষিক্ত শারিজ আহমাদ। হারের শঙ্কায় যখন দল, ত্রাতা হয়ে আসেন কিং। দারুণ সঙ্গে দেন কার্টি। দুইজনের ব্যাটেই আসতে থাকে রান। তাদের জুটি পঞ্চাশ স্পর্শ করে ৬৯ বলে। এরপর শতরান স্পর্শ করে ১১৬ বলে। দল পৌঁছে যায় কাঙ্ক্ষিত ঠিকানায়। আগামীকাল শনিবার তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে মুখোমুখি হবে দুই দল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
নেদারল্যান্ডস: ৪৮.৩ ওভারে ২১৪ (বিক্রমজিত ৪৬, ও’ডাওড ৫১, এডওয়ার্ডস ৬৮, ডে লেডে ০, মুসা ৭, নিদামানুরু ৪, সিলার ৫, ফন বিক ৯, আরিয়ান ৩, ক্লেইন ০, শারিজ ১*; মেয়ার্স ৭-০-৩৬-০, জোসেফ ৮-১-৩০-২, ফিলিপ ৭.৩-০-৩৩-১, আকিল ১০-০-৩৯-৪, হেইডেন ১০-০-৪০-১, বনার ৬-০-২৯-১)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৪৫.৩ ওভারে ২১৭/৫ (হোপ ১৮, ব্রুকস ৬, বনার ১৫, পুরান ১০, কিং ৯১, মেয়ার্স ২২, কার্টি ৪৩; ক্লেইন ৭-১-৪০-০, ফন বিক ১০-০-৩৯-১, ডে লেডে ৮-০-৪৬-২, আরিয়ান ৭.৩-১-৩৩-১, সিলার ৭-০-৩১-০, শারিজ ৬-০-২৮-১)
ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৫ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: ব্র্যান্ডন কিং
সিরিজ: তিন ম্যাচের সিরিজ ২-০ তে এগিয়ে ক্যারিবিয়ানরা
পি এস/এন আই