আগামী নভেম্বরের মধ্যে শ্রম আইন সংশোধন করা হবে বলে জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। একই সঙ্গে, সংশোধিত আইনে শিশু শ্রমের শাস্তি কয়েক গুণ বাড়ানো হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
বুধবার (১৮ জুন) বিশ্ব শিশু শ্রম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের পরিসংখ্যান কতটা বিশ্বাসযোগ্য আমি জানি না। তবে বর্তমান সংজ্ঞা অনুযায়ী শিশু শ্রমিকের সংখ্যা ৩৫ লাখ। আর ঝুঁকিপূর্ণ শ্রমে রয়েছে ১০ লাখ শিশু। এখান থেকে কিভাবে কমানো যায়, সেটা দেখছি। আর সংজ্ঞাটা কী হবে?
উপদেষ্টা আরও বলেন, অনেকে বাপের সঙ্গে মাছ ধরতে যায়, আবার সে স্কুলেও যায়। এগুলোর কী হবে? অনেক পরিবার কাজের জন্য শিশুকে পাঠায় ওস্তাদের সঙ্গে কাজ করার জন্য, পরে সে নিজেই মেকানিক হয়ে যায়। আমি অনুরোধ করব, জোর করে কাউকে পাঠাবেন না। বাচ্চারা স্কুল টাইম শেষ করে যদি ভলান্টিয়ারি (স্বেচ্ছামূলক) কোনো কাজ করে, সেটা হয়তো আমরা অন্যরকমভাবে দেখব। জোর করে কাউকে (শিশু) কাজে পাঠানো যাবে না, এটা দণ্ডনীয় অপরাধ।
আইএলও’র সঙ্গে আলোচনা ও আইন সংশোধনের অগ্রগতি
বিশ্ব শ্রম সংস্থা (আইএলও) শ্রম আইনের বিভিন্ন স্থানে সংশোধনের কথা বলেছিল— এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে উপদেষ্টা বলেন, আলোচনা হয়নি, তবে তারা জানে আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি। আমরা চেষ্টা করছি যাতে আগামী দুই-তিন মাস বা নভেম্বরের মধ্যেই শ্রম আইনের সংশোধনটা কমপ্লিট করতে পারি। এছাড়াও শিশুশ্রমের বিষয়ে আমাদের আইনের যে বিধান আছে, ইতোমধ্যে সেটার খসড়া করা হয়েছে, সেখানে জরিমানার পরিমাণ কয়েকগুণ বাড়ানো হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক মঞ্চে বাংলাদেশের অর্জন
সম্প্রতি সুইজারল্যান্ডে আইএলও’র ১১১তম সম্মেলনে যোগ দেওয়ার বিষয়ে শ্রম উপদেষ্টা বলেন, আমরা যে এগিয়ে যাচ্ছি, শ্রমিকদের আইনগুলো শ্রমিকবান্ধব করার চেষ্টা করছি— সেখানে এটা শ্রমিক ও মালিকদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে আমরাও বলেছি। আমরা সবাই এক সুরে কথা বলেছি। এটা ছিল বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় পাওনা।
তিনি যোগ করেন, আমি আইএলও ডিজিসহ অনেকের সঙ্গে কথা বলেছি। সবাই বাংলাদেশের এখন যে অগ্রগতি হচ্ছে, এটা নিয়ে বেশ সন্তুষ্ট। আমাদের (আইএলও’র) যাওয়ার আগে এগুলো শেষ করতে হবে।
সাখাওয়াত হোসেন আরও জানান, বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো আইএলও-তে এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপভুক্ত (এএসপিএজি) দেশগুলোর সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছে।
বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস ১৯ জুন
শ্রম উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশে প্রতিবছর ১২ জুন বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস পালন করা হয়। এ বছর ১২ জুন সরকারি ছুটি থাকায় ১৯ জুন দিবসটি উদযাপন করা হবে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য হলো- স্বপ্নের ডানায় ভর করি, শিশু শ্রমের শৃঙ্খল ছিড়ি- এগিয়ে চলি দীপ্ত পায়ে, আশার আগুন বুকে জ্বালি।