
দুর্নীতির তিনটি মামলায় বিচারাধীন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে ক্ষমা করে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবার ইসরায়েলি পার্লামেন্ট নেসেটে বক্তৃতা দিতে গিয়ে প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগের প্রতি এই আহ্বান জানান তিনি।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও তার স্ত্রী সারার বিরুদ্ধে এক মামলায় বিলিয়নিয়ার ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রায় ২ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলারের বিলাসপণ্য উপহার নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। রাজনৈতিক সুবিধা প্রদানের বিনিময়ে তারা সিগার, গয়না ও শ্যাম্পেন ঘুষ হিসেবে নিয়েছিলেন বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।
নেসেটে বক্তৃতার সময় রসিকতা করে ট্রাম্প বলেন, ‘‘সিগার আর শ্যাম্পেন; এসব নিয়ে মাথা ঘামায় কে? এরপর তিনি ঘনিষ্ঠ মিত্র বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে ‘‘ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন অন্যতম শ্রেষ্ঠ নেতা’’ হিসেবে অভিহিত করেন তিনি।
ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগকে উদ্দেশ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, প্রেসিডেন্ট, আমার কাছে একটা ধারণা আছে। আপনি কেন তাকে ক্ষমা করে দেন না?
‘‘যাহোক, এসব কথা কিন্তু আমার বক্তৃতার লিখিত কপিতে ছিল না। আপনারা নিশ্চয়ই এটা জানেন। কিন্তু আমি এই ভদ্রলোককে (নেতানিয়াহু) বেশ পছন্দ করি।’’
নেতানিয়াহু তার বিরুদ্ধে আনা তিন মামলার সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তার সমর্থকরা এই দীর্ঘমেয়াদি বিচারপ্রক্রিয়াকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছেন।
উপহার গ্রহণের মামলার পাশাপাশি নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে আরও দুটি মামলা রয়েছে। এক মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, তিনি ইসরায়েলের দুটি গণমাধ্যমের সঙ্গে অনুকূল সংবাদ প্রচারের জন্য গোপন সমঝোতা করার চেষ্টা করেছিলেন।
২০২২ সালের শেষ দিকে শুরু হওয়া বর্তমান মেয়াদে বিচার বিভাগে ব্যাপক সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছিলেন নেতানিয়াহু। আদালতের ক্ষমতা দুর্বল করার প্রয়াস হিসেবে তিনি এই প্রস্তাব দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন সমালোচকরা।
তার এই প্রস্তাবের প্রতিবাদে ইসরায়েলজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। পরে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ শুরুর পর নেতানিয়াহুবিরোধী সেই বিক্ষোভ থেমে যায়।
এছাড়া গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরুর নির্দেশ দেওয়ায় আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি করেছে।
তবে নেসেট দেওয়া বক্তৃতায় আন্তর্জাতিক আদালতের এই মামলার বিষয়ে কিছু বলেননি ট্রাম্প। যদিও এর আগে আইসিসির পরোয়ানার নিন্দা ও সংস্থাটির কিছু কর্মীর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।