
বিদেশে সশস্ত্র সংগঠনে বাংলাদেশির জড়িয়ে পড়া সরকার সমর্থন করে না বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।
বুধবার (৮ আগস্ট) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
পাকিস্তানের একটি সশস্ত্র সংগঠনের হয়ে গত ছয় মাসে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ের সময় দুই বাংলাদেশি তরুণের মৃত্যুর খবর গণমাধ্যমে এসেছে। এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমরা অবশ্যই চাই না আমাদের কেউ গিয়ে কোনো কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়ুক, সেটা আফগাস্তিানের পক্ষে হোক; পাকিস্তানের পক্ষে হোক। এটা নিয়ে আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে বা আমাদের পক্ষ থেকে কোনো সমর্থন নেই।
আফগানিস্তানের হয়ে বাংলাদেশিরা কীভাবে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ছে? বাংলাদেশ সরকার এ বিষয়ে অবগত কিনা এবং এটাকে কীভাবে দেখছে জানতে চাওয়া হয় উপদেষ্টার কাছে। জবাবে তৌহিদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশিরা বলা ঠিক হবে না কিন্তু। একটা-দুইটা ঘটনা যে কোনো জায়গায় ঘটতে পারে। ইউক্রেন যুদ্ধেও বাংলাদেশি দুই-একজন মারা গেছে। বাংলাদেশ তো সেখানে অংশগ্রহণ করছে না, এটাকে এভাবে দেখতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা অবশ্যই চাই না আমাদের কেউ গিয়ে কোনো কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়ুক, সেটা আফগাস্তিানের পক্ষে হোক; পাকিস্তানের পক্ষে হোক বা যেকোনো কিছু হোক। নাগরিকদের বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ কন্ট্রোল কোনো দেশেরই কিন্তু থাকে না। একজন বা দুইজন যদি স্রেফ এ ধরনের ঘটনা ঘটনায় সেটা দুঃখজনক। এটা নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে বা আমাদের পক্ষ থেকে কোনো সমর্থন নেই।
আমিরাত প্রসঙ্গ
ছাত্র-জনতার সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে ২০২৪-এর জুলাই-আগস্টে সংযুক্ত আরব আমিরাতে আন্দোলন করে আটক হওয়াদের মধ্যে এখনো ২৫ বাংলাদেশি জেলে আছেন বলে দাবি করা হয়। তাদের মধ্যে সম্প্রতি এক বাংলাদেশি মারা গেছেন বলে শোনা গেছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার অবগত কিনা-জানতে চাইলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, জেলে বাংলাদেশের অনেক মানুষ আছে। এখন তারা কীভাবে এটাকে ক্যাটাগরাইজ করেছে এটা বলা কঠিন। তাদের কাছ থেকে এসব বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পাওয়াও যায় না।
তিনি বলেন, তখন রাস্তায় মিছিল করার কারণে একটা বড় অংশকে জেলে নেওয়া হয়েছে। তখন খুব আনইউজুয়ালি পদ্ধতিতে আমিরাতের রাষ্ট্রপ্রধানকে অনুরোধ করে আমাদের উপদেষ্টা মুক্তির ব্যবস্থা করেছেন। এরপর বাকিদের ব্যাপারে আমরা এলে স্বাভাবিক যে পদ্ধতি চিঠি লেখা, নোট দেওয়া সেভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছি।
ভিসা প্রসঙ্গ
বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী ব্যক্তিদের বিভিন্ন দেশে ভিসা না পাওয়ার বিষয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ভিসা নিয়ে দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা চলছে। বাংলাদেশের রেপুটেশনের প্রশ্নে ভিসা জটিল হয়ে গেছে, আমাদের ঘর গোছাতে হবে।
তিনি বলেন, উন্নত রাষ্ট্রগুলোয় বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের যাওয়ার হার নিয়েও কাজ চলছে। প্রতি বছর জার্মানি পাকিস্তান থেকে ৯ হাজার শিক্ষার্থী নেয়। অন্তত বাংলাদেশ থেকেও একই পরিমাণ শিক্ষার্থী নেওয়ার অনুরোধ করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।