
আগামী ১০ থেকে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত ব্রাজিলের বেলেমে অনুষ্ঠিত হবে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন ‘কপ-৩০’। এই বৈশ্বিক সম্মেলনে অংশ নিতে যাচ্ছেন বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলার দুই শিশু প্রতিনিধি—নওশীন ইসলাম ও নুর আহমেদ জিদান। আগামী ১১ নভেম্বর তারা ব্রাজিলের উদ্দেশে দেশ ছাড়বেন।
বিশ্বের প্রায় ১৫০ দেশের ১২ হাজারের বেশি জলবায়ু আন্দোলনকর্মী এই সম্মেলনে অংশ নেবেন। সেখানে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও শিশুদের বাস্তব চিত্র তুলে ধরবেন এই দুই শিশু প্রতিনিধি।
আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর গ্রামের শিক্ষার্থী নওশীন ইসলাম স্থানীয় শিশু ফোরামের সভাপতি। কয়েক বছর ধরে তিনি শিশু সুরক্ষা, পরিবেশ সংরক্ষণ এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় কাজ করছেন। প্রতাপনগর ইউনাইটেড একাডেমির অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী নওশীন শিক্ষক মোঃ শহীদুল ইসলাম ও জেসমিন দম্পতির সন্তান।
অন্যদিকে, নুর আহমেদ জিদান শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের যতীন্দ্রনগর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি জি.এম. রইসউজ্জামান ও মোছাঃ লায়েকা খানম দম্পতির সন্তান এবং স্থানীয় সুন্দরবন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র।
নওশীন ও জিদান ‘জাগ্রত যুব সংঘ (জেজেএস)’, ‘চিলড্রেন ফোরাম অন ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ডিআরআর’ এবং ‘কেএনএইচ-বিএমজেড’-এর সহযোগিতায় সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন।
কপ-৩০-এ অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে নওশীন ইসলাম বলেন, “উপকূলের শিশুদের দুঃখ-দুর্দশার কথা বিশ্বনেতাদের সামনে তুলে ধরবো। আমরা চাই, ক্ষতিগ্রস্ত শিশুরা যেন শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ও পুষ্টিকর খাবারের অধিকার পায়। উন্নত দেশগুলোকে বুঝতে হবে—পৃথিবী আমাদেরও।”
অন্য প্রতিনিধি নুর আহমেদ জিদান বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সাতক্ষীরার উপকূলীয় এলাকা বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। আমাদের জীবন এখন টিকে থাকার লড়াই। বিশ্বনেতাদের কাছে দাবি—তারা যেন তাদের অতীতের ভুলের বোঝা আমাদের কাঁধে না চাপান, বরং ক্ষতিপূরণ দেন।”
নওশীনের বাবা শিক্ষক মোঃ শহীদুল ইসলাম বলেন, “বিশ্ব মঞ্চে আমার মেয়ে বাংলাদেশের কথা বলবে—এটা আমার জন্য গর্বের বিষয়। তার জন্য সবার দোয়া চাই।”
এই দুই কিশোর-কিশোরীর অংশগ্রহণ বাংলাদেশের উপকূলীয় শিশুদের কণ্ঠকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুলে ধরতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করছেন আয়োজকরা।
প্রকাশক ও সম্পাদক- আলি আবরার । নিরালা, খুলনা থেকে প্রকাশিত