
অবৈধ ‘ডেলিভারি রাইডার’ হিসেবে কাজ করা অভিবাসীদের গ্রেপ্তারে সপ্তাহব্যাপী অভিযান পরিচালনা করেছে যুক্তরাজ্য। গত মাসে চালানো এই অভিযানে জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হওয়া প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। শনিবার (৯ আগস্ট) ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে অবৈধ রাইডারদের গ্রেপ্তারের এই তথ্য জানানো হয়েছে।
ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, অভিবাসন আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তারা গত ২০ থেকে ২৭ জুলাই দেশের বিভিন্ন এলাকায় ১ হাজার ৭৮০ জন ডেলিভারি রাইডারকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এ সময় বৈধ নথিপত্র দেখাতে ব্যর্থ হওয়ায় ২৮০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ৫৩ জনের আশ্রয়-সংক্রান্ত সহায়তা পুনর্বিবেচনা করা হচ্ছে।
অবৈধ অভিবাসন মোকাবিলায় সরকারের নেওয়া প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে বলে দেশটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। দেশটিতে কার্যক্রম পরিচালনা করা সব কোম্পানিকে তাদের কর্মীদের অভিবাসন-বিষয়ক অবস্থা যাচাইয়ের নতুন আইনি বাধ্যবাধকতাও চালু করা হয়েছে।
অবৈধ অভিবাসন ঠেকানো নিয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সরকারের ওপর চাপ বাড়ছে। কারণ সম্প্রতি দেশটির ব্রেক্সিটপন্থী নেতা নাইজেল ফারাজের রিফর্ম ইউকে দলের প্রতি সমর্থন বাড়ছে।
ব্রিটেনের সীমান্ত নিরাপত্তা-বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাঞ্জেলা ঈগল বলেছেন, সরকার এটি নিশ্চিত করতে চায়, কোম্পানিগুলো সরকারি নিয়ম মানছে এবং তা কার্যকরভাবে প্রয়োগ করা হচ্ছে।
গ্রেপ্তারের পাশাপাশি গাড়ি ধোয়ার দোকান ও রেস্তোরাঁসহ ৫১টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সিভিল পেনাল্টি নোটিশ জারি করা হয়েছে। অবৈধ কর্মী নিয়োগে অভিযোগে জরিমানার মুখোমুখি হতে পারে এসব প্রতিষ্ঠান।
অভিযানে ব্রিটিশ পুলিশ ৫৮টি ই-বাইকসহ ৭১টি যানবাহন জব্দ করেছে। এছাড়া ৮ হাজার পাউন্ড নগদ অর্থ ও ৪ লাখ ৬০ হাজার পাউন্ড মূল্যের অবৈধ সিগারেটও জব্দ করেছে পুলিশ।
দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, অবৈধভাবে কাজ করা ঠেকাতে অভিবাসন আইনপ্রয়োগকারী দলকে অতিরিক্ত ৫০ লাখ পাউন্ডের তহবিল দেওয়া হবে। এর আগে, গত মাসে দেশটির সরকার ডেলিভারি প্রতিষ্ঠান ডেলিভারু, উবার ইটস ও জাস্ট ইটের সঙ্গে নতুন একটি চুক্তি করে। এই চুক্তির আওতায় অবৈধভাবে কাজ করা অভিবাসীদের বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে তথ্য সরবরাহ করবে প্রতিষ্ঠানগুলো।
গত জুলাই পর্যন্ত ১২ মাসে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ৩৫ হাজার ৫২ জন অভিবাসীকে ফেরত পাঠিয়েছে ব্রিটেন। এসব অভিবাসীর কাছে দেশটিতে থাকার বৈধ অধিকার ছিল না। ব্রিটেনের অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর এই হার তার আগের ১২ মাসের তুলনায় ১৩ শতাংশ বেশি।