
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম দাবি করেছেন, তিনি সব ধরনের মবকে ‘প্রেশার গ্রুপ’ বলেননি। তিনি বিভিন্ন মিডিয়ার সামনে হওয়া বিক্ষোভকে বা যেকোনো বৈধ প্রতিবাদকে মব হিসেবে চিহ্নিত করা উপযুক্ত কি না, নাকি ’প্রেশার গ্রুপ’ হিসেবে চিহ্নিত করা উচিত সেই প্রশ্ন তুলেছিলেন।
সোমবার (৩০ জুন) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে এ বিষয়ে একটি ব্যাখ্যা দেন শফিকুল আলম। ওই ব্যাখ্যায় তিনি তাকে ভুলভাবে উদ্ধৃত করায় দৈনিক প্রথম আলোর একটি মতামত কলামের লেখকের সমালোচনা করেন।
শফিকুল আলম বলেন, ‘‘সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এবং সাংবাদিকদের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে আমি এই বক্তব্য দিই। প্রায় ২০ জন বক্তা বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেন। তাদের বক্তব্যে কয়েকটি সংবাদপত্র এবং টিভি চ্যানেলের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক সময়ে হওয়া বিক্ষোভের বিষয় এসেছে। কিছু বক্তা এই বিক্ষোভকারীদের ’মব’ হিসেবে বর্ণনা করেন এবং বিভিন্ন মিডিয়া অফিসের বাইরে হওয়া বিক্ষোভকে ’মব জাস্টিস’ হিসেবে বর্ণনা করেন। সেমিনারের শেষ বক্তা হিসেবে আমি আগে উত্থাপিত বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করি। আমার বক্তব্যে আমি প্রশ্ন তুলেছিলাম যে, এই গোষ্ঠীগুলোকে (মিডিয়ার বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারী) ‘মব’ হিসেবে চিহ্নিত করা উপযুক্ত কি না, নাকি ’প্রেশার গ্রুপ’ হিসেবে চিহ্নিত করা উচিত।
আমি উল্লেখ করেছি যে, জুলাই বিপ্লবীদের সন্ত্রাসী বা চরমপন্থী হিসেবে চিহ্নিত করা মিডিয়াগুলোর বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করার বৈধ অধিকার তাদের অনেকেরই (বিক্ষোভকারীদের) রয়েছে। আমি যুক্তি দিয়েছিলাম যে, তাদের বরং প্রেশার গ্রুপ বলাটা বেশি সঠিক, এবং তাদের মব হিসেবে চিহ্নিত করা তাদের প্রতিবাদ করার অধিকারকে অবৈধ প্রমাণ করার একটা প্রচেষ্টা। আমার মন্তব্য কেবল ’শিকারি সাংবাদিকতা’র বিরুদ্ধে বিক্ষোভ সম্পর্কে ছিল; আদালত প্রাঙ্গণে মব সহিংসতার কোনো ঘটনা বা সংখ্যালঘু বা রাজনৈতিক কর্মীদের লক্ষ্য করে হওয়া আক্রমণের সাথে এর কোনো সম্পর্ক নেই।’’
এই পরিস্থিতির দায় পুরোপুরি সরকারের ওপর চাপিয়ে দেওয়া ঠিক নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি। স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, ‘‘এটার সমাধান কী, সব দায়-দায়িত্ব সরকারের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছেন, সরকার যতটুকু পারে, সেই কাজটা সরকার করছে। যারা আস্থার জায়গা নষ্ট করেছেন, তারা কিন্তু কেউ সেই কথা বলছেন না। নতুন রাজনৈতিক সরকারকে সামনে রেখে তারা আবারও তাদের খুঁটি সাজাচ্ছে। এতে বাংলাদেশের সাংবাদিকতার কোনো ধরনের কোনো উত্তরণ হবে না।’’
প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক সময়ে প্রেস সচিব কর্তৃক ‘মব’কে ‘প্রেশার গ্রুপ’ বলা হয়েছে উল্লেখ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ আলোচনা-সমালোচনা চলছে।