
ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এএসএম সালেহ আহমেদ বলেছেন, মানুষ চায় সরকারি কর্মকর্তারা সৎ হবেন। চাকরিজীবনে অনেক সুযোগ আসবে, সেসব সুযোগ থেকে নিজেকে নিবৃত রাখাই একজন প্রকৃত প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীর নৈতিক জয়।
সোমবার (১৩ অক্টোবর) ভূমি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ৭৮তম বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশগ্রহণকারীদের প্রশিক্ষণে তিনি এ কথা বলেন। ১১ জন কর্মকর্তা এই প্রশিক্ষণে অংশ নেন।
সিনিয়র সচিব বলেন, নতুন বাংলাদেশ হবে সুশাসন, প্রযুক্তি, উদ্ভাবন ও মানবিকতার মেলবন্ধনে গঠিত একটি রাষ্ট্র। বাংলাদেশ আজ উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথে দৃঢ়ভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। উন্নত বাংলাদেশের অভিযাত্রায় রূপান্তরের মূল চালিকাশক্তি হচ্ছে রাষ্ট্রের দক্ষ, নীতিবান ও দায়িত্বশীল প্রশাসন। আর এই প্রশাসনের প্রাণ হচ্ছে নবীন কর্মকর্তারা, যারা নতুন চিন্তা, উদ্যম ও দেশপ্রেম নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনায় যুক্ত হচ্ছেন। তাই নতুন বাংলাদেশ গঠনে নবীন কর্মকর্তাদের দায়িত্বশীল ভূমিকা অপরিহার্য। নবীন কর্মকর্তাদের হতে হবে জনবান্ধব ও সেবামুখী।
তিনি বলেন, জনগণের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ, তাদের সমস্যার প্রতি সহানুভূতি এবং দ্রুত সমস্যা সমাধানের মানসিকতা একটি সেবামুখী প্রশাসন গড়ে তুলবে। নৈতিক নেতৃত্ব ও দলগত কর্মস্পৃহা গড়ে তুলতে হবে। একজন কর্মকর্তা কেবল নির্দেশ বাস্তবায়নকারী নয়, বরং তিনি পরিবর্তনের অনুঘটক। তাই নেতৃত্বের গুণাবলি, সিদ্ধান্ত গ্রহণে দৃঢ়তা ও সহকর্মীদের প্রতি সহযোগিতামূলক মনোভাব বজায় রাখা জরুরি।
সিনিয়র সচিব বলেন, নবীন কর্মকর্তাদের মধ্যে থাকতে হবে দেশপ্রেম, সততা ও নিষ্ঠা। পেশাদারিত্বের মাধ্যমে বিগত ১৭ বছরের আস্থাহীনতার জায়গা থেকে জনগণের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। দায়িত্ব পালনে তারা যদি সৎ ও ন্যায়ের পথে অটল থাকেন, তবে প্রশাসনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে। দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর প্রভাব থেকে মুক্ত থেকে জনগণের সেবাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে। সততা ও নৈতিকতা বজায় রেখে কাজ করতে হবে। সব ক্যাডার কর্মকর্তাদের দক্ষতা অর্জন করতে হবে,দক্ষতা অর্জন করতে না পারলে বেশি দূরে যাওয়া যাবে না, পেশাদারিত্ব অর্জন করতে হবে। এর জন্য পড়াশোনা ও প্রশিক্ষণলব্দ জ্ঞান অপরিহার্য।
তিনি বলেন, দায়িত্ব পালন শুধু অফিস সময়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এটি একটি নৈতিক প্রতিশ্রুতি। জনগণের সমস্যাকে নিজের সমস্যা হিসেবে বিবেচনা করুন, তাদের অধিকার রক্ষায় সৎ ও দৃঢ় থাকুন। সততা, দক্ষতা ও মানবিকতা দিয়ে এই যাত্রাকে সফল করুন। তবেই গড়ে উঠবে একটি জবাবদিহিমূলক, স্বচ্ছ ও উন্নত বাংলাদেশ।
তিনি আরো বলেন, চাকরিতে দুই শ্রেণির বদনাম হয়। একটি হলো ভালো সৎ কর্মকর্তা আর একটি অসৎ কর্মকর্তা। শেষ পর্যন্ত সৎ কর্মকর্তাই জয়ী হন, মর্যাদাবান হন। প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনী চিন্তার প্রয়োগের মাধ্যমে প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডকে আধুনিক ও দক্ষ করতে হবে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ই-গভর্নেন্স ও ডেটা ব্যবস্থাপনা ব্যবহারের মাধ্যমে জনসেবাকে সহজলভ্য ও সময়োপযোগী করতে হবে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. শরিফুল ইসলামসহ অন্যান্যরা।