মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে মানবিক সহায়তা পাঠানোর আগে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার—উভয় দেশের সরকারের সম্মতি প্রয়োজন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। সোমবার ঢাকায় জাতিসংঘের এক মুখপাত্র বাংলা সংবাদমাধ্যম সমকালকে এ কথা জানান।
জাতিসংঘ মুখপাত্র বলেন, “আমাদের আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের সরকারের সম্মতি ছাড়া কোনো ধরনের মানবিক সহায়তা সীমান্ত অতিক্রম করে পাঠানো যায় না।”
এর আগে, রোববার পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন জানান, জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে রাখাইন রাজ্যে একটি ‘মানবিক করিডোর’ স্থাপনে নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছে বাংলাদেশ সরকার। মার্চ বা এপ্রিল নাগাদ রাখাইনে দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে—এমন আশঙ্কা থেকে জাতিসংঘ এ করিডোরের প্রস্তাব দেয়।
এই উদ্যোগ নিয়ে রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। অনেকেই আশঙ্কা করছেন, রাখাইনে সহায়তা পাঠানো হলে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে নিরাপত্তা হুমকি তৈরি হতে পারে।
বর্তমানে রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ চলছে। এতে হাজারো মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে, খাদ্য ও চিকিৎসার অভাবে মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে।
জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ১ লাখ ১৩ হাজার রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। সবমিলিয়ে এখন বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গার সংখ্যা অন্তত ১৩ লাখ।
ঢাকায় জাতিসংঘের রেসিডেন্ট কো-অর্ডিনেটরের মুখপাত্র বলেন, “রাখাইনে মানবিক পরিস্থিতির চরম অবনতি নিয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের সহায়তা দিতে জাতিসংঘ কাজ করে যাচ্ছে। পাশাপাশি, বাংলাদেশ যেন এই চাপ সামলাতে পারে, সে লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা নিশ্চিত করতেও আমরা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।”