
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন কর ও ব্যয় হ্রাস সংক্রান্ত বিল নিয়ে আবারও কড়া সমালোচনা করেছেন বর্তমান বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনকুবের এবং বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও স্পেসএক্স প্রধান ইলন মাস্ক।
তিনি বলেছেন, ট্রাম্পের এই খসড়া বিল ‘রিপাবলিকান পার্টির জন্য রাজনৈতিক আত্মহত্যা’ হবে। একইসঙ্গে এই বিল যুক্তরাষ্ট্রে লাখ লাখ চাকরি ধ্বংস করবে এবং ভবিষ্যতের শিল্প খাতগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
রোববার (২৯ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড।
শনিবার নিজের জন্মদিনে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে (আগের টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে মাস্ক লেখেন, “সিনেটের সর্বশেষ খসড়া বিল যুক্তরাষ্ট্রে লাখ লাখ চাকরি ধ্বংস করবে এবং আমাদের দেশের জন্য কৌশলগতভাবে মারাত্মক ক্ষতি ডেকে আনবে। এটি অতীতের শিল্পগুলোকে প্রণোদনা দিচ্ছে, কিন্তু ভবিষ্যতের শিল্পগুলোকে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।”
তিনি আরও বলেন, “এই বিল রিপাবলিকান পার্টির জন্য রাজনৈতিক আত্মহত্যা হবে।”
টিআরটি ওয়ার্ল্ড বলছে, এই মন্তব্যের মাধ্যমে মাস্ক ও ট্রাম্প প্রশাসনের মধ্যে চলমান উত্তেজনা আবারও নতুন মাত্রা পেল। মাস্ক কিছুদিন আগেই সরকার পরিচালনার দক্ষতা বৃদ্ধির একটি দপ্তরের প্রধান হিসেবে কাজ শেষ করে ট্রাম্পের প্রশাসন ছেড়েছেন। তবে এর পরও তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, ট্রাম্পের এই বিল নিয়ে তিনি একমত নন।
প্রায় ১০০০ পৃষ্ঠার এই খসড়া বিল নিয়ে সিনেটররা এখনও আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। ট্রাম্প চান বিলটি ৪ জুলাইয়ের মধ্যে পাস করানো হোক। কিন্তু অনেক রিপাবলিকান সদস্যই এর মধ্যে থাকা বিপুল ব্যয়ের বিষয় ও কর ছাড়ের যৌক্তিকতা নিয়ে চিন্তিত।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বিলটিকে “বড়, সুন্দর” বললেও মাস্ক আগেই একে ‘ঘুষখোরদের বিল’ এবং ‘জঘন্য অপমানজনক উদ্যোগ’ বলে আখ্যা দেন। এক পর্যায়ে তিনি বলেন, “যারা এই বিলের পক্ষে ভোট দিয়েছেন, আপনারা জানেন—আপনারা ভুল করেছেন। লজ্জা হওয়া উচিত।”
প্রসঙ্গত, এক সময় ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র ছিলেন মাস্ক। কিন্তু বিল পাসের প্রক্রিয়ায় মাস্কের বিরোধিতা তীব্র হয় এবং তিনি এমনকি ইঙ্গিত দেন, তিনি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বিতর্কিত যৌন কেলেঙ্কারির প্রমাণ ফাঁস করতে পারেন। যদিও কোনো নির্দিষ্ট প্রমাণ দেননি তিনি।
পরবর্তীতে মাস্ক কিছু মন্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন এবং বলেন, তিনি ‘কিছুটা বেশি’ বলে ফেলেছিলেন। ট্রাম্পও তখন নিউ ইয়র্ক পোস্ট-এ এক সাক্ষাৎকারে বিষয়টিকে ‘ক্ষণিক উত্তেজনা’ হিসেবে উল্লেখ করেন এবং বলেন, “আমি ওকে দোষ দিই না।”