
কেএমপির ট্রাফিক বিভাগের নারী সার্জেন্ট রেকসনা খাতুন এবছর পুলিশ সপ্তাহ অনুষ্ঠানে কর্মক্ষেত্রে সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ পেয়েছেন বিপিএম পদক। মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইনস মাঠে পুলিশ সপ্তাহ ২০২৩ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে পদক ও ব্যাজ পরিয়ে দেন। তবে তিনি কোন কাজের জন্য এ পদক পেলেন, তা প্রায় এক বছর পর পাঠকদের সামনে তুলে ধরা হলো।
গত বছর ১৬ জানুয়ারি খুলনা মহানগরীর খালিশপুরে স্থানীয় ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শাওনকে গুলি করে ২টি মোটরসাইকেলে ৬ জন পিস্তল উঁচিয়ে পালিয়ে যাচ্ছিল অস্ত্রধারীরা। তাদের গুলি আর হাতবোমার শব্দে স্থানীয়রা যখন আতঙ্কে এদিক-সেদিক ছোটাছুটি করছিল, তখন রাস্তায় হঠাৎ তাদের গতি রোধ করেন পুলিশের এক নারী সার্জেন্টসহ আরও দুই সদস্য। নগরীর বয়রা পাবলিক কলেজ মোড়ে গত ১৬ জানুয়ারি এ ঘটনায় বীরের মতো সাহস দেখিয়ে গুলি-অস্ত্রসহ সেই দুর্বৃত্তদের একজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হন তারা।
তবে গ্রেফতারের পর স্থানীয়রা অস্ত্রধারী সাইদুলকে পিটুনি দিয়ে আহত করে। আটক সাইদুল ওরফে সাইদুরকে পরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে ১টি পিস্তল, ১টি রিভলবার, ১১টি গুলি ও ১টি ককটেল জব্দ করে পুলিশ। তার বাড়ি সোনাডাঙ্গা থানার গোবরচাকা নাহিদের মোড় এলাকায়।
অস্ত্রসহ দুর্বৃত্ত আটকের ঘটনায় প্রধান ভূমিকা রাখায় প্রশংসা কুড়ান খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের সেই ট্রাফিক সার্জেন্ট রেকসনা খাতুন। এরই মধ্যে তার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ তাকে সাধুবাদ জানান।
ওই সময় খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক সার্জেন্ট রেকসনা খাতুন বলেছিলেন, ‘দায়িত্ব বোধের জায়গা থেকে তখন মনে সাহস এসেছিল। মহান সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছায় এবং পুলিশের একজন এটিএসআই ও একজন কনস্টেবলের সহায়তায় সফলভাবেই ওই সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করতে পেরেছি। পরে বেতারের মাধ্যমে স্থানীয় থানা পুলিশকে অবগত করেছি।’
এ ঘটনার বিষয়ে ট্রাফিক সার্জেন্ট রেকসনা খাতুন বলেন, ‘দায়িত্ব বোধের জায়গা থেকে সে সময় মনে সাহস এসেছিল। অপরাধীকে যেকোনোভাবে আটক করতে হবে- ভাবনাটাই মাথায় ছিল তখন।
‘মহান সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছায় এবং পুলিশের একজন এটিএসআই ও একজন কনস্টেবলের সহায়তায় সফলভাবেই ওই সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। পরে বেতারের মাধ্যমে স্থানীয় থানা পুলিশকে অবগত করেছি।’
ওই সময় কেএমপির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৬ জানুয়ারি সন্ধ্যায় বয়রা মোড়ের পাবলিক কলেজ মোড়ে কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট বেতারের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অবহিত করেন। সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের জন্য সংগীয় ফোর্সের সহায়তায় রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলে ২টি মোটরসাইকেলে ৬ জন ব্যক্তিকে দেখতে পেয়ে সিগন্যাল দিলে তারা তা না মেনে পালানোর চেষ্টা করে। এ সময় মোটরসাইকেল দু’টির সংঘর্ষে ১টি মোটরসাইকেলের পেছনে থাকা ব্যক্তি রাস্তার ওপর পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হন। অপর ৫ জন দ্রুত পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় কেএমপির খালিশপুর থানার এসআই পীযূষ দাস অস্ত্র আইনে মামলা করেন। মামলার আসামিরা হলো গ্রেনেড বাবু, সাইদুল রওফে সাইদুর, পলাশ ওরফে চিংড়ি পলাশ, ইমন ও রাসেল।