হজযাত্রীদের হয়রানি করলে এজেন্সির বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) জাতীয় পর্যায়ে হজ ও ওমরা ব্যবস্থাপনা বিষয়ক সম্মেলন এবং মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এমন হুঁশিয়ারি দেন।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এই মেলায় গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন সরকারপ্রধান। তিন দিনব্যাপী এই মেলা শেষ হবে আগামী শনিবার (১৯ নভেম্বর)।
শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচনে আমাদের ইশতেহার ছিল ডিজিটিলাইজেশন। আমরা ক্ষমতায় আসার পর হজ ব্যবস্থাকে ডিজিটালাইজড করেছি।
হজযাত্রীদের দুর্ভোগ লাঘতে সরকারের আন্তরিকতার কথা জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমি সবসময় সৌদি বাদশাহর আমন্ত্রণে হজে গিয়েছি। সেখানে গিয়ে হাজীদের সমস্যাগুলো নিজে দেখেছি। সেখান থেকেই হাজিদের কষ্ট কমাতে কাজ করেছি।’
জঙ্গিবাদ দমনে সরকারের পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশকে জঙ্গিবাদ থেকে মুক্ত করে পবিত্র ইসলামের শান্তিময় মহিমাকে জাগ্রত রাখতে আমরা জঙ্গিবাদ দমনে জিরো টলারেন্স কর্মসূচি নিয়েছি। আলেম ওলামাদের সম্পৃক্ত করে প্রত্যেক এলাকায় কমিটি করে দেওয়া হয়েছে যাতে কারও ছেলেমেয়ে জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ত না হয় সেই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, বাংলাদেশে ৫৬৪টি মডেল মসজিদ নির্মাণ করে দিচ্ছি। ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও গবেষণা কেন্দ্র থাকবে। ইসলাম ধর্মের মূল কথা মানুষ যেন ভালোভাবে জানতে পারে।
বাংলাদেশ থেকে যারা বিদেশ যাবেন তাদেরকে ওই দেশের আইন মানার আহ্বান জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, আমাদের দেশ থেকে যারা হজে যাবেন তারা যেন সুষ্ঠু-সুন্দরভাবে যেতে পারেন এবং হজ ব্যবস্থাপনায় সৌদি আরব বাংলাদেশের যে ভূয়সী প্রশংসা করেছে সেটা যেন অব্যাহত থাকে। যারাই যাবেন, যে দেশেই যাবেন, সেই দেশের নিয়ম-কানুন, আইন মেনে চলতে হবে। সৌদি আরব যাওয়ার আগে সবাইকে সে দেশের আইন-নিয়ম জানতে হবে এবং সেগুলো মানতে হবে। আমরা যে ৫৬৪টি মসজিদ করে দিয়েছি সেখানে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকবে, মানুষ আরও জানতে পারবে। যারা প্রবাসে কাজ নিয়ে যাবেন তাদেরও সেখানে ধারণা দেওয়া যাবে।
ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় ‘হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা সম্মেলন-২০২২ এবং হজ ও ওমরাহ মেলা’র আয়োজন করেছে হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) ।
আয়োজনের উদ্দেশ্য হলো হজযাত্রীদের হজ-সম্পর্কিত যথাযথ তথ্য সরবরাহ করা, তাদের বর্তমান প্রযুক্তিভিত্তিক হজ ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে সচেতন করা, হজ এজেন্সির সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা এবং মধ্যস্বত্বভোগী ও প্রতারকদের প্রভাব হ্রাস করা।
সম্মেলনে ‘হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা: অর্জন ও কর্মকাণ্ড’ এবং ‘ই-হজ ব্যবস্থাপনা এবং মক্কা উদ্যোগের রুট’ বিষয়ে দুটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে।
বিভিন্ন হজ ও আর্থিক সংস্থা এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তিন দিনব্যাপী হজ ও ওমরাহ মেলায় প্রায় ১৫০টি স্টল এবং প্যাভিলিয়ন স্থাপন করেছে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত হজযাত্রীদের জন্য মেলা উন্মুক্ত থাকবে।
বাংলাদেশ বিশ্বের ৪র্থ বৃহত্তম হজযাত্রী প্রেরণকারী দেশ। বাংলাদেশের ৯০ শতাংশের বেশি হজযাত্রী এবং শতভাগ ওমরাহ যাত্রী বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় সৌদি আরবে যান।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী এনামুল হাসান, বাংলাদেশে সৌদি রাষ্ট্রদূত ইসা বিন ইউসুফ আল-দাহিলান এবং হাব সভাপতি মো. শাহাদাত হোসেন তসলিম উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
