নাসাউ কাউন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম নিয়ে কত জল্পনা-কল্পনা! বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচে বাংলাদেশ-ভারত এই মাঠেই খেলেছে। কিন্তু বিশ্বকাপের মূল খেলা শুরু হতেই নিউ ইয়র্কের মাঠটি যেন বদলে গেল। শ্রীলঙ্কা-দক্ষিণ আফ্রিকার পরে ভারত-আয়ারল্যান্ড ম্যাচেও উইকেটের বিরূপ আচরণ দেখা গেছে। ড্রপ-ইন পিচটিতে ব্যাটাররা দাঁড়াতেই হিমশিম খেয়েছেন।
একের পর এক সমালোচনা ছুটে আসছে যুক্তরাষ্ট্রের এমন উইকেট নিয়ে। এই মাঠেই আগামী ৯ জুন রাতে মুখোমুখি হবে ভারত ও পাকিস্তান। দুদিন পরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে নামবে বাংলাদেশ। তাতে কপালে চিন্তার ভাঁজ আরও গভীর হয়েছে।
ভারত-আয়ারল্যান্ড ম্যাচ শেষে সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক মাইকেল ভন বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে ক্রিকেট এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে সেটি দুর্দান্ত, এই প্রচেষ্টাকে আমরা ভালোবাসি। তবে এমন উইকেটে খেলার বিষয়টি মেনে নেওয়া যায় না। বিশ্বকাপ খেলার জন্য ক্রিকেটাররা এত পরিশ্রম করে আসবেন, পরে এই ধরনের উইকেটে খেলবেন, সেটি হয় না।’
এর আগে ফাফ ডু প্লেসি, ইরফান পাঠান, হার্শা ভোগলেসহ অনেকেই বলেছেন, এই উইকেটে টি-টোয়েন্টি খেলা খুবই কঠিন। গত পরশু ম্যাচ শেষে ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মা বলেছেন, ‘নতুন গ্রাউন্ড, নতুন ভেন্যু, দেখতে চেয়েছিলাম কেমন খেলতে। আমি মনে করি না পিচ ঠিকঠাক রয়েছে। এখানে বোলারদের জন্য যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। এখানে টেস্ট ম্যাচের কথা মাথায় রেখে খেলতে হবে।’
পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ নিয়ে ভারতীয় অধিনায়ক বলেছেন, ‘আমি জানি না পিচ থেকে কী আশা করা যায়। তবে আমরা এমনভাবে প্রস্তুতি নেব যেন পরিস্থিতি এমনই থাকবে (আয়ারল্যান্ড ম্যাচের মতো)। এটি এমন একটি খেলা হবে যেখানে আমাদের সবাইকে মিলে পারফর্ম করতে হবে এবং অবদান রাখতে হবে। এই উইকেট কিছুটা ভোগাবে, কিন্তু মাঝের দিকে ভালোভাবে ব্যাটিং করা যায়। আশা করি সামনের ম্যাচে আমরা একইভাবে এগুতে পারব।’ অর্থাৎ রোহিতের কথায় উইকেট নিয়ে চিন্তার বিষয়টিও উঠে এসেছে। এর আগে শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা বলেছিলেন, ‘নিউ ইয়র্কের উইকেট খুবই বাজে, সেখানে ব্যাটিং করা কঠিন কাজ।’
ক্রিকেট বিশ্লেষক ও কোচ নাজমুল আবেদীন ফাহিম সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, ‘এই ধরনের উইকেটে ক্রিকেট খেলার কোনো মানে হয় না। প্রথমে ব্যাট করা দলের প্রতি খুবই অন্যায় করা হয়। গতকাল (৩ জুনের ম্যাচে) মূল্য পরিশোধ করেছে শ্রীলঙ্কা। এই ধরনের পিচে খেলার জন্য কোনো ব্যাটার মানসিকভাবে প্রস্তুত নয়। এটা শুধু মানসিক নির্যাতন। সেখানে খেলা চালিয়ে নেওয়া অপ্রত্যাশিত ও বিভ্রান্তিকর। এই ধরনের পরিস্থিতিতে টস হওয়ার পরেই বোঝা যায় কারা ম্যাচে এগিয়ে থাকবে। মাঠে যারা খেলা দেখতে আসেন এবং বিশ্ব জুড়ে যে লাখ লাখ লোক খেলাটি অনুসরণ করেন, তাদের কথা কখনো চিন্তা করা হয়েছে? সহজভাবে বললে, এমনটা করা ঠিক না!’