সারাদেশে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ থাকাকালে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ ও ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে ভবিষ্যৎ করণীয় নির্ণয়ে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কনট্যাক্ট সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্কো) ‘ইন্টারনেট শাটডানের প্রভাব’ আলোচনা সভা করে।
সভায় বাক্কো কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য, বাক্কোর সব সদস্য প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ও শিল্পের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা অংশগ্রহণ করেন। আলোচনা চলাকালে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়সমূহ উঠে আসে। অংশগ্রহণকারীরা সবাই তাদের মতামত ও পরামর্শ প্রদান করেন।
বাক্কোর সহসভাপতি তানভীর ইব্রাহিম বলেন, শিল্প খাতের আওতাভুক্ত সব প্রতিষ্ঠানের ২০২৫ সালের মধ্যে এক বিলিয়ন মার্কিন ডলার রাজস্ব আয় অর্জন ও লক্ষাধিক কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে বিরামহীন ২৪ ঘণ্টা কলসেন্টার পরিষেবা, জরুরি গ্রাহকসেবা ও ব্যাক অফিসের মতো সেবা দিয়ে আসছে।
সারাদেশে হুট করে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সংশ্লিষ্ট খাতের সব প্রতিষ্ঠানের দপ্তর ও গ্রাহকদের জানানো পর্যন্ত সম্ভব হয়ে ওঠেনি। এতে প্রচুর বিদেশি গ্রাহক হারিয়েছে সব ধরনের
কলসেন্টার প্রতিষ্ঠান।
বক্তারা বলেন, যেসব সেবা নিয়ে কাজ করি, তা শুধু দেশের জরুরি সেবাই নয়, মনে রাখা প্রয়োজন বহির্বিশ্বের দেশগুলোর জরুরি সেবাও দিয়ে থাকি। টানা ১৫ বছর ধরে চেষ্টা করছি বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পকে অন্যতম গন্তব্যস্থল হিসেবে বিশ্বদরবারে তুলে ধরতে। ঠিক এ সময়ের উদাহরণযোগ্য সাফল্যের সংখ্যাও নেহাত কম নয়। অথচ সারাদেশে ইন্টারনেট শাটডাউনে মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই বহু গুণ পিছিয়ে পড়েছি।
বাক্কোর নির্বাহী পরিচালক লে. কর্নেল (অব.) মো. মাহতাবুল হক পিএসসি সদস্য প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত সংবলিত জরিপ প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। প্রধানত ইন্টারনেট সংযোগ না থাকায় এ শিল্পের সব প্রতিষ্ঠানের জরুরি গ্রাহকসেবা প্রদান, ক্রেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ ও চলমান প্রকল্প সম্পাদনে ব্যর্থ হয়। ফলে সব প্রতিষ্ঠানকেই বড় অঙ্কের জরিমানার সম্মুখীন হতে হয়। বহু বিদেশি ক্রেতা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। বৈশ্বিকভাবে দেশের সব প্রতিষ্ঠান বিদেশিদের আস্থা হারিয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, কলসেন্টার শিল্পের প্রায় ৫৩ শতাংশ প্রতিষ্ঠানে বার্ষিক মুনাফা কমে ৩০ শতাংশে নেমে যেতে পারে, যা প্রত্যক্ষভাবে দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বাধা ও অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলবে।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (বাক্কো) তানজিরুল বাশার বলেন, আউটসোর্সিং সেবাদাতা সব প্রতিষ্ঠানের জন্য আলাদা ইন্টারনেট অবকাঠামো নির্মাণের জন্য সরকারকে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
কেননা বিপিও শিল্পে ইন্টারনেটই প্রধান লাইফলাইন। ফলে ইন্টারনেটের কোনো বিকল্প নেই।