ইসরায়েল বয়কট আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন আইরিশ লেখিকা স্যালি রুনি। তার নতুন বই হিব্রু ভাষায় অনুবাদ করতে চেয়েছিল একটি ইসরায়েলি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে ইসরায়েলি আচরণের প্রতিবাদে প্রস্তাবটিতে সোজা না বলে দিয়েছেন তিনি। আর তাতেই ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের কাছ থেকে ভূয়সী প্রশংসা পাচ্ছেন এ লেখিকা।

গত ৭ সেপ্টেম্বর বের হয়েছে রুনির নতুন উপন্যাস ‘বিউটিফুল ওয়ার্ল্ড, হোয়্যার আর ইউ’। এটি হিব্রু ভাষায় অনুবাদের স্বত্ত্ব কিনতে চেয়েছিল ইসরায়েলভিত্তিক প্রতিষ্ঠান মোদান। কিন্তু এতে রাজি হননি আইরিশ লেখিকা।

এরপর খবর ছড়ায়, স্যালি রুনি হিব্রু ভাষায় তার নতুন বই অনুবাদ করতে দিতে চান না। এ বিষয়ে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করে সম্প্রতি বিবৃতি দিয়েছেন তিনি।

বিবৃতিতে রুনি জানিয়েছেন, তিনি তার বই হিব্রু ভাষায় অনুবাদের বিপক্ষে নন। শুধু ইসরায়েলি দখলদারিত্বের সমর্থক কোনো প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তা করতে দেবেন না।

লেখিকা বলেছেন, তার রাজনৈতিক দর্শনের সঙ্গে মিল রয়েছে, এমন কোনো প্রতিষ্ঠান ‘বিউটিফুল ওয়ার্ল্ড, হোয়্যার আর ইউ’ হিব্রু ভাষায় অনুবাদ করলে তিনি অত্যন্ত সম্মানিতবোধ করবেন।

রুনি বলেছেন, তার আগের দুটো উপন্যাস ‘কনভারসেশনস উইথ ফ্রেন্ডস’ (২০১৭) ও ‘নরমাল পিপল’ (২০১৮) হিব্রু ভাষায় অনুদিত হয়েছিল। তবে আপাতত এই অনুবাদ স্বত্ত্ব কোনো ইসরায়েলি প্রকাশনা সংস্থার কাছে বিক্রি করবেন না।

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি দখলদারিত্ব প্রসঙ্গে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করে আইরিশ লেখিকা বলেন, ফিলিস্তিনিপন্থি বিডিএস (বয়কট, ডাইভেস্টমেন্ট অ্যান্ড স্যাংকশনস) আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে তিনি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

রুনি বলেছেন, তার নতুন উপন্যাস হিব্রু ভাষায় অনুবাদের সুযোগ এখনো উন্মুক্ত। বিডিএস আন্দোলনের শর্তগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এমন কারও কাছে স্বত্ত্ব বিক্রির সুযোগ পেলে তিনি খুবই খুশি ও গর্বিত হবেন।

এমন সিদ্ধান্তের কারণে স্যালি রুনিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রশংসার জোয়ারে ভাসাচ্ছেন ফিলিস্তিপন্থিরা। তবে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ইসরায়েল সমর্থকেরা।

ইসরায়েল বয়কট আন্দোলনের প্রচারক পিএসিবিআই এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা স্যালি রুনির সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছে। বিপরীতে ইসরায়েলের অভিবাসী মন্ত্রী নাশম্যান শাই বলেছেন, ইহুদিবিরোধিতার নতুন ছদ্মবেশ হচ্ছে এই ইসরায়েল বয়কট আন্দোলন।

স্যালি রুনি তার উপন্যাসের জন্য একাধিক আন্তর্জাতিক পুরস্কার জিতেছেন। এর মধ্যে ২০১৭ সালে যুক্তরাজ্যে দ্য সানডে টাইমস ইয়ং রাইটার অব দ্য ইয়ার অ্যাওয়ার্ড এবং ২০১৮ সালের কোস্টা বুক অ্যাওয়ার্ড অন্যতম।