গত ৭ অক্টোবর গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান শুরুর পর এই প্রথম ইসরায়েলে অস্ত্র সরবরাহ স্থগিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। গত সপ্তাহে ইসরায়েলে অস্ত্র-গোলাবারুদের যে চালানটি পাঠানোর কথা ছিল, সেটি আপাতত পাঠানো হচ্ছে না বলে ইসরায়েলকে জানিয়েছেন ওয়াশিংটনের কর্মকর্তারা।
ইসরায়েলের দুই জন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম এক্সিওস রোববার প্রথম এই সংবাদ প্রকাশ করে। পরে ইসরায়েল ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম জেরুজালেম পোস্ট নিজেদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ওয়াশিংটনের আকস্মিক এ পদক্ষেপে উদ্বেগ বোধ করছেন ইসরায়েরের কর্মকর্তারা। ঠিক কী কারণে অস্ত্র সরবরাহ স্থগিত করা হলো তাও জানতে মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগও করছেন। কারণ এই চালানটিতে জরুরি কিছু অস্ত্র আসার কথা ছিল।
কিন্তু মার্কিন কর্মকর্তারা এখনও ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের স্পষ্টভাবে কিছু বলছেন না বলে জানা গেছে। বাইডেন প্রশাসনের একজন কর্মকর্তার কাছে এ ব্যাপারে জানতে চেয়েছিল সিএনএন, কিন্তু তিনিও সরাসরি উত্তর না দিয়ে বলেছেন, ‘গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলকে শত শত কোটি ডলারের নিরাপত্তা সহায়তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গত কয়েক মাসে ইসরায়েলকে যত সহায়তা প্রদান করা হয়েছে, তা গত কয়েক দশকেও দেওয়া হয়নি।’
‘এবং শুধু হামাসই নয়, হিজবুল্লাহ ও ইরানকে মোকাবিলা করার জন্যও আমরা ইসরায়েলকে সহায়তা দিয়েছি এবং আগামীতেও তা অব্যাহত থাকবে।’
পরে মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তর পেন্টাগন এবং ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরেও যোগাযোগ করেছিল সিএনএন। কিন্তু দুই দপ্তরের কোনো কর্মকর্তা এ ইস্যুতে কথা বলতে রাজি হননি।
মার্কিন রাজনীতি বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, ইসরায়েলকে গাজায় অভিযান শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত সেখানে বেসামরিক লোকজনের হতাহত হওয়া হ্রাস করা, গাজায় ত্রাণ-সামগ্রী প্রবেশে বাধা না দেওয়াসহ বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়েছে ওয়াশিংটন, কিন্তু ইসরায়েল সেসবে কর্ণপাত করেনি। সর্বশেষ গাজার দক্ষিনাঞ্চলীয় সীমান্ত শহর রাফায় অভিযান চালাতে নিষেধ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। সেই নির্দেশনাও মানে নি ইসরায়েল।
রাজনীতি বিশ্লেষকদের মতে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন যুদ্ধকালীণ মন্ত্রিসভার ‘হুঁশ’ ফেরাতে এই পদক্ষেপ নিয়েছে বাইডেন প্রশাসন।