একের পর এক রেকর্ড ভেঙে করোনায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ভারত। দেশটির বিভিন্ন রাজ্যে করোনার লাগাম টানা যাচ্ছে না। সংক্রমণ ও মৃত্যু লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছেই। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর নতুন রেকর্ড হয়েছে। খবর এনডিটিভির।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় শুক্রবার সকালে জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ৩ লাখ ৩২ হাজারের বেশি মানুষ। যা এখন পর্যন্ত বিশ্বের যে কোনো দেশের চেয়ে সর্বোচ্চ দৈনিক সংক্রমণ। একই সময়ের মধ্যে মারা গেছে ২ হাজার ২৬৩ জন। গত কয়েকদিনের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে দেশটির শীর্ষ কয়েকটি হাসপাতালে অক্সিজেন সঙ্কট দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে দিল্লির পরিস্থিতি সবচেয়ে ভয়াবহ। সেখানকার কমপক্ষে ছয়টি হাসপাতাল জানিয়েছে, সেখানে অক্সিজেন সঙ্কট তীব্র হয়ে উঠেছে।
এ নিয়ে টানা দ্বিতীয় দিন ভারতে নতুন সংক্রমণ তিন লাখের বেশি শনাক্ত হয়েছে। করোনা সংক্রমণে যুক্তরাষ্ট্রের পরেই ভারতের স্থান। তবে ভারতে এভাবে প্রতিদিন সংক্রমণ বাড়তে থাকলে তা এক সময় যুক্তরাষ্ট্রকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে।
ভারতে এখন পর্যন্ত করোনা সংক্রমণে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মহারাষ্ট্র। ওই রাজ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ৬৭ হাজার ১৩ জন। ফলে ওই রাজ্যে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৪০ লাখ ৯৪ হাজারের বেশি।
করোনা সংক্রমণে মহারাষ্ট্রের পরেই রয়েছে কেরালা, কর্নাটক, তামিল নাড়ু এবং অন্ধ্র প্রদেশ। কেরালায় গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের সংখ্যা ২৬ হাজার ৯৯৫ এবং কর্নাটকে ২৫ হাজারের বেশি। এছাড়া দিল্লিতে গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছে ২৬ হাজারের বেশি মানুষ এবং মারা গেছে ৩০৬ জন। এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় দিল্লির স্যার গঙ্গা রাম হাসপাতালে অক্সিজেনের অভাবে ২৫ রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
ওই রোগীদের অবস্থা বেশ গুরুতর ছিল। কিন্তু তাদের পর্যাপ্ত অক্সিজেন সাপোর্ট দিতে না পারায় বাঁচানো সম্ভব হয়নি। একটি সূত্র বার্তা সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছে, প্রয়োজন অনুযায়ী পর্যাপ্ত অক্সিজেন না পাওয়ার কারণেই হয়তো তাদের মৃত্যু হয়েছে।
অপরদিকে, গতকাল রাতে মহারাষ্ট্রের একটি হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কমপক্ষে ১৩ করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। মহারাষ্ট্রের রাজধানী মুম্বাই থেকে ৭০ কিলোমিটার দূরের ভিরার এলাকার একটি হাসপাতালে ওই দুর্ঘটনা ঘটেছে। নিহতরা সবাই ইন্টেন্সিভ কেয়ার ইউনিটে চিকিৎসাধীন ছিলেন। একদিন আগে বুধবার রাতে মহারাষ্ট্রে একটি হাসপাতালের বাইরে অক্সিজেন ট্যাঙ্কার লিক হয়ে অক্সিজেনের অভাবে ২৪ করোনা রোগীর মৃত্যু হয়।