খুলনার রূপসা উপজেলার পেপার বিক্রেতার (হকার)এর স্ত্রীকে শারিরীক নির্যাতন ও মুখে সিগারেটের আগুন দিয়ে ছ্যাকা দেওয়ার অভিযোগে ভুক্তভোগী নারীর স্বামী মো. তাছির উদ্দিন বাদী হয়ে খুলনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-০২ এ মামলা দায়ের করেছেন।
পূর্ব ও পশ্চিম রূপসা ইঞ্জিন চালিত নৌকা মাঝি সংঘের বর্তমান সভাপতি মো. হালিম চৌকিদার শেখকে (৪২) আসামি করা হয়েছে।
আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেন্টিগেশনকে (পিবিআই) দায়িত্ব দিয়েছেন।
২৫ এপ্রিল দায়েরকৃত মামলা দায়েরের পর আসামি ও তার লোকজনের হুমকিতে শারিরীক প্রতিবন্ধী গৃহবধূ, তিন বছর বয়সী একমাত্র ছেলে তানভীর মল্লিক ও পত্রিকা বিক্রেতা তাছির চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে অভিযোগ করেছেন।
এদিকে, আসামি হালিম চৌকিদার ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে উল্টো গৃহবধূর স্বামী ও মামলার বাদী তাছির উদ্দিনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলেছেন। এমনকি মামলা থেকে রক্ষা পেতে তিনি বিভিন্ন দপ্তরেও তার বিরুদ্ধে মনগড়া মিথ্যা অভিযোগ করেছেন বলে তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
মামলার বিবরণে বলা হয়েছে, সমাজসেবা অধিদপ্তর মন্ত্রণালয়ের কার্ডধারী শারীরিক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী পেপার বিক্রেতা মো. তাছির উদ্দিনের স্ত্রীকে পূর্ব ও পশ্চিম রূপসা ইঞ্জিন চালিত নৌকা মাঝি সংঘের বর্তমান সভাপতি মো. হালিম চৌকিদার বিভিন্ন সময় কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল। কিন্তু কুপ্রস্তাবে রাজি না হলে অনৈতিক কাজ করতে সুযোগ খুঁজতে থাকে সে।
এক পর্যায়ে ১২ এপ্রিল রাত আনুমানিক ৮ টা ২০ মিনিটের দিকে তাছিরের বসতবাড়িতে গিয়ে তার স্ত্রীকে জোর পূর্বক জড়িয়ে ধরে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে সে। ওই সময় গৃহবধূ বাঁধা দিলে তাকে চড়, থাপ্পড় ও লাথি মারে। এ সময় তার হাতে থাকা সিগারেটের আগুন দিয়ে গৃহবধূর মুখের দুই পার্শ্বে ছ্যাকা দেয়। যার ফলে ভিকটিমের স্কীন পুড়ে যায়। তবে ভিকটিম সর্বশক্তি দিয়ে চেষ্টা করে তার ইজ্জত রক্ষা করেন। ওই সময় তার চিৎকারে আশেপাশের লোকজন ছুটে আসলে হালিম চৌকিদার এ বিষয়ে কাউকে কিছু না বলার জন্য হুমকী-ধামকি দিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরে স্বামী তাছির বাসায় গেলে ঘটনা তাকে জানান। আসামীর মারধরের কারণে ভিকটিম আঘাত প্রাপ্ত হওয়ায় তাকে স্থানীয় ফার্মেসীতে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। ভুক্তভোগী পরিবার আদালতে ন্যায়বিচারের দাবি জানিয়েছেন।
বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. ফিরোজ শেখ বলেন, আদালত মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পিবিআইকে প্রদান করেছেন। তদন্ত রিপোর্ট জমা হওয়ার পর এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ জানা যাবে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে আসামি হালিম চৌকিদার বলেন, ওই গৃহবধূর স্বামীর সঙ্গে ফ্লাক্সি লোডের টাকা নিয়ে সামান্য কথা কাটাকাটি হয়। এ কারণে তাকে ফাঁসানোর জন্য মামলা করা হয়েছে।