
আজ বুধবার (৩১ জুলাই) দুপুরে খুলনায় পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। নগরীর সাতরাস্তা মোড়ে বিএমএ কার্যালয়ে সামনে এ ঘটনা ঘটে। এতে কমপক্ষে ১৫/২০ জন শিক্ষার্থী কমবেশী আহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের সঙ্গে স্থানীয় রাজনীতিক ও প্রশাসনের বৈঠকে কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।কিন্তু ওই ঘোষণা চাপ প্রয়োগে নেওয়া হয়েছে দাবি তুলে একাংশ কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেয়। বুধবার সকাল থেকে সারা দেশে ছাত্র হত্যার বিচারের দাবিতে ‘মাচ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচির চেষ্টা করে শিক্ষার্থীরা। তারা নগরীর রয়েল মোড়ে এ কর্মসূচি দিলেও এর আশে পাশে জড়ো হওয়ার চেষ্টা করে। পুলিশ এ সময় নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কে ব্যাপক তল্লাশি চালায়।
পুলিশকে মোবাইল চেক করতে দেখা যায়। এ অভিযানে অন্তত ২৩ জন আটক হন দুপুর ১টার দিকে শিক্ষার্থীদের এক দল ময়লাপোতা সংলগ্ন এলাকা মিছিল করার চেষ্টা করলে পুলিশে ধাওয়া করে। এদের একটি অংশ পার্শ্ববর্তী আহসানুল্লাহ কলেজে আশ্রয় নেন।তারা ভবনের ভেতর ঢুকে তালা লাগিয়ে দেয়। পরে পুলিশ তালা ভেঙে তাদের কয়েকজনকে আটক করে। দুপুর পৌনে ২টায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা রয়েল মোড ঘুরে সাতরাস্তা মোড় অবরোধ করে বিএমএ কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন। আরেকটি অংশ রয়েল মোড়ে অবস্থান নেয়।
এ সময় বিপুল সংখ্যক পুলিশ, বিজিবি দুই দিক দিয়ে আটকে রাখে। এতে উত্তেজনায় এক পর্যায়ে বেলা সোয়া দুইটার দিকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশ শিক্ষার্থীদের লাঠিচার্জ ও টিয়ার গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এই সংঘর্ষ খানজাহান আলী রোড, মর্ডান মোড়ে ছড়িয়ে পড়ে। আধঘণ্টার চেষ্টায় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
দুপুর দেড়টার পরে ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মী ডালমিল মোড় থেকে লাঠি নিয়ে মিছিল বের করে। পুলিশ তাদের ধাওয়া দিলে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে শেরেবাংলা রোড থেকে ছাত্রলীগের আরেকটি মিছিল ময়লা পোতা হয়ে সাত রাস্তার দিকে চলে যায়।
খুলনা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন খান বলেন, আমদের ঘোষণা দেওয়া ছিল আর কোনো ছাত্রকে আন্দোলন করতে দেওয়া হবে না। তারা আইন নিজেদের হাতে নিয়েছে। আমাদের ওপর হামলা করেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক জানান, ইতোমধ্যে শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণ হয়েছে। কোটা আন্দোলনের সমন্বয়কারীরা মঙ্গলবার রাতে খুলনা সার্কিট হাউসে বৈঠকের পর আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়। কিন্তু কিছু সংখ্যক উচ্ছৃঙ্খল যুবক বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করছে। সন্দেহভাজন বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। যাচাই-বাছাই শেষে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।