হলুদে হলুদে সৌন্দর্যের সমারোহ খুলনার ক্ষেত। বিস্তৃর্ণ দিগন্ত মাঠ জুড়ে আবাদ হয়েছে সরিষা চাষ। আর এ সরিষা ক্ষেত থেকে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৌয়ালরা। ইতোমধ্যে সরিষা থেকে মৌমাছির সাহায্যে মধু সংগ্রহ করা হচ্ছে।
বাংলাদেশে সাধারণত পাঁচ রকমের মৌমাছি দেখা যায়। বিশ্বব্যাপী প্রায় ২০ হাজার প্রজাতির মৌমাছি রয়েছে। মধু গুনাগুণ ও বৈচিত্র্যতা রয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, খুলনা কৃষি অঞ্চলের চার জেলায় ২০২৩-০২৪ অর্থ বছরের রবি মৌসুমে সরিষার আবাদ করা হয়েছে ৩৫৮২৫ হেক্টর। এই সরিষার ক্ষেত থেকে ৫৯৭৫৯ কেজি মধু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রার নির্ধারণ করা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে উৎপাদন বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কৃষি অঞ্চলে এই মৌসুমে মধু সংগ্রহের জন্য ৯৬২৬টি বাক্স স্থাপন করার কথা থাকলেও স্থাপন করা হয়েছে ১০৭৪৬টি। মৌচাষি রয়েছেন ১৪৬ জন।
খুলনা জেলায় সরিষা আবাদ করা হয়েছে ২৩১৪ হেক্টর জমিতে। বাক্স স্থাপন করা হয়েছে ৭টি। মধু সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২২ কেজি। মৌচাষি রয়েছেন ৪ জন।
বাগেরহাট জেলায় সরিষা আবাদ করা হয়েছে ১৫৯৮ হেক্টর জমিতে। বাক্স স্থাপন করা হয়েছে ১৫টি। মধু সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৭ কেজি। মৌ চাষি রয়েছেন ৫ জন।
সাতক্ষীরা জেলায় সরিষা আবাদ করা হয়েছে ১৯০২৫ হেক্টর জমিতে। বাক্স স্থাপন করা হয়েছে ১০০০৪টি। মধু সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৩৫১০ কেজি। মৌচাষি রয়েছেন ১১৬ জন।
নড়াইল জেলায় সরিষা আবাদ করা হয়েছে ১২৮৮৮ হেক্টর জমি। বাক্স স্থাপন করা হয়েছে ৭২০টি। মধু সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধরণ করা হয়েছে ৬২০০ কেজি ও মৌচাষি রয়েছে ২১ জন। হলুদের রাজ্যে হারিয়ে যাচ্ছে প্রকৃতি, সেজেছে নানান রংয়ে। ফুলের সৌন্দর্যে মুগ্ধ করছে সরিষার ক্ষেত। সরিষা, তেল ও মধু থেকে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়া যায়। খুলনা অঞ্চলে মধুর চাষ বাড়ানো ও জনপ্রিয় করার প্রচেষ্টা করা হচ্ছে।
মধু স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। মধু দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, আরোগ্য লাভ, ওজন কমাতে, অনিদ্রা দুর করতে, পেটের সমস্যায় এবং ঠান্ডা ও সর্দিজনিত রোগ নিরাময়ে অত্যন্ত কার্যকর। দেশে শীতকালে এর চাহিদা বেশি থাকে। মধু পানিতে মিশিয়ে শীতকালে খেলে দেহ উষ্ণ হয়, আবার গ্রীষ্মকালে দেহ শীতল বা প্রশান্তি লাভ করে। তাই নিরাপদ মধু ভোগ নিশ্চিতে মৌচাক সংগ্রহ হতে শুরু করে বিপণন পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ রূপ নিয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের খুলনা অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক মোহন কুমার ঘোষ বলেন, সরিষা ক্ষেতে মধু সংগ্রহ করার জন্য বাক্স দেয়া হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।