গণমাধ্যমের সঙ্গে সরকারের বৈরী সম্পর্ক হোক তা চান না বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
মঙ্গলবার (২৫ মে) দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘গণমাধ্যমের সঙ্গে সরকারের বৈরিতা হোক, বৈরী সম্পর্ক হোক এটা আমি চাই না। কোনো সংঘর্ষ চাই না, একটা সুসম্পর্ক থাকুক। এটা সরকারের জন্য ভালো গণমাধ্যমের জন্য সুখকর। সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম এবং সংবাদপত্রশিল্প নিয়ে, কিছু বিষয় নিয়ে, অধিকার নিয়ে, দাবি-দাওয়া নিয়ে সরকারের সঙ্গে কিছু বিষয় আছে। এগুলো আমাকে রোলিং পার্টির জেনারেল সেক্রেটারি হিসেবে তারা অবহিত করেছেন।’
সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের মামলা প্রত্যাহারসহ বিভিন্ন দাবি-দাওয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনা করার আশ্বাস দিয়েছেন সেতুমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘এখানে তো সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় আছে। তথ্য মন্ত্রণালয় আছে, আইন মন্ত্রণালয় আছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আছে। বিশেষ করে কিছু কিছু বিষয় আছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করার। সমস্যাগুলো তারা বলেছেন আমি সমাধানের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলব। দাবি-দাওয়াগুলো নেত্রীকে জানাবো।’
রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার করা হবে কি-না জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমি তো এভাবে মন্তব্য করতে পারি না। এখানে সরকারের ব্যাপার আছে। মামলাটা আদালতে গেছে। আইনমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করতে হবে। সার্বিক বিবেচনা করার পর, সবার সঙ্গে আলাপ করার পর বলতে পারব।’ এ সময় সাংবাদিক নেতাদের দাবি-দাওয়া সমাধানযোগ্য বলেও জানান তিনি।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান বলেন, ‘রোজিনা ইসলাম যাতে ডিজিটাল প্লাটফর্মে সংঘবদ্ধ আক্রমণের শিকার না হন, তার একটি প্রতিকার আমরা চেয়েছি। আমরা বলেছি, গণমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হয়েছে। এছাড়া অনলাইনে আর্ন ডকুমেন্টেড সোর্স থেকে পোস্ট করে এক ধরনের অপপ্রচার চালানো হয়েছে, যেটা বাংলাদেশের বিদ্যমান ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন পরিপন্থী।’
ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের চেয়ারম্যান রেজওয়ানুল হক রাজা বলেন, ‘রোজিনা ইসলামের সঙ্গে যা ঘটেছে তিনি (ওবায়দুল কাদের) বলেছেন যে, ওইদিন ম্যানেজমেন্টের সমস্যা ছিল। হ্যান্ডেলিংয়ের সমস্যা ছিল। ঘটনাটা এত বড় হওয়া উচিত হয়নি। বিষয়টি তিনি অনুভব করেন এবং এ বিষয়ে তারা সজাগ। সামনে যে বিষয়গুলো রয়েছে তদন্ত ইত্যাদি, সেখানে যেন তার সঙ্গে কোনো অবিচার না হয় সে বিষয়টি তারা দেখবেন বলেছেন।’
এছাড়া সাংবাদিকতার নানা বিষয় নিয়ে তারা ওবায়দুল কাদেরেরে সঙ্গে আলাপ করেছেন বলে জানান তিনি। নিয়মিত বেতন না হওয়া ও গণমাধ্যমকর্মী আইন দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন তারা। সাংবাদিক নেতারা মনে করেন, এই আইনটি বাস্তবায়ন হলে সাংবাদিকদের আর্থিক এবং পেশাগত সুরক্ষা নিশ্চিত হবে।
রাজা বলেন, ‘মন্ত্রী বলেছেন বিষয়টা তিনি জানেন। তিনি তথ্যমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি (ওবায়দুল কাদের) আশ্বস্ত করেছেন, খুব দ্রুতই গণমাধ্যম আইনটি তারা পাস করে দেবেন।’