ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি এস এম ফরহাদ দাবি করেছেন, ‘ছাত্রলীগের সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ইন্সটিটিউট বিভাগ ছাত্রলীগের কোনো কর্মসূচি ও কার্যক্রমে আমি অংশও নেইনি। এমনকি ছাত্রলীগের কোনো পদ-পদবীর জন্য কাউকে কখনই সিভি দেইনি।’ আজ সোমবার দুপুরে তিনি এ দাবি করেন।
এ সময় এস এম ফরহাদ আরও বলেন, বিভাগের কমিটিতে কাকে রাখা হবে সেটা সংশ্লিষ্ট ছাত্রলীগের সিদ্ধান্ত। সেখানে আমাকে কেন জড়ানো হচ্ছে? যেখানে আমি বিভাগ ছাত্রলীগের সঙ্গে কোনোভাবেই সম্পৃক্ত না। এই বিষয়টিকে আমরা ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের স্পিরিট ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র মনে করি।’
ছাত্রশিবিরের ঢাবি সেক্রেটারি আরও বলেন,
আমি হল ডিবেটিং ক্লাবের সভাপতি ও বিভাগের ডিবেটিং ক্লাবের সেক্রেটারি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছি। তখন বিতর্ক অনুষ্ঠান আয়োজনে বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে পরিচয় ও তাদের সঙ্গে তোলা ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা যাচ্ছে, যার সবগুলোই ছিলো ডিবেট ক্লাব সংশ্লিষ্ট আয়োজন। কোনো রাজনৈতিক আয়োজন নয়।
দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকাশ্যে আসে ছাত্রশিবির। রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠক করে প্রকাশ্যে আসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা শিবিরের সভাপতি সাদিক কায়েম। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের মাস্টার দা সূর্যসেন হলের ছাত্র।
রোববার ঢাবি শাখা শিবিরের সেক্রেটারি জেনারেলের পরিচয়ও জানা যায়। তিনি সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের এস এম ফরহাদ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস শুরুর আগের দিন শনিবার ১০ ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খানসহ শীর্ষ প্রশাসন। এ সময় শিবিরের পক্ষ থেকে বৈঠকে যোগ দেন সভাপতি সাদিক কায়েম ও সাহিত্য সম্পাদক রেজাউল করিম শাকিল। পরে বের হয়ে গণমাধ্যমের সামনে কথা বলেন তিনি। এরপর ফেসবুকে একটি পোস্টের মাধ্যমে নিজের পরিচয় প্রকাশ করেন তিনি।
সাদিক কায়েমের পরিচয় প্রকাশের পর ফেসবুক জুড়ে আলোচনা শুরু হয়। এর আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রথম কমিটিতে সমন্বয়কও ছিলেন সাদিক কায়েম। তাকে আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী হিসেবে জানতেন সবাই। ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকার পতনের পর বঙ্গভবনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানেও গিয়েছিলেন সাদিক কায়েম।
সাদিক কায়েমের প্রকাশ্যে আসার পর সেক্রেটারি জেনারেলের পরিচয় নিয়ে জল্পনা কল্পনা শুরু হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এরপর রোববার সেক্রেটারি জেনারেল এস এম ফরহাদের পরিচয়ও জানা যায়। যদিও ফরহাদ নিজ থেকে তার পরিচয় প্রকাশ করেননি কোথাও।
এ দিকে সাদিক কায়েম গণমাধ্যমকে বলেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রশিবিরের কমিটি খুব দ্রুত প্রকাশ করা হবে। বিগত সাড়ে ১৫ বছর ফ্যাসিবাদী সরকার তাঁদের আন্ডারগ্রাউন্ড পলিটিকস (গোপনে রাজনীতি) করতে বাধ্য করেছে।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিবিরের ২১ টি পদ রয়েছে কমিটিতে। সভাপতি ও সেক্রেটারি জেনারেল পদ ছাড়া বাকি পদগুলো হলো- সাংগঠনিক সম্পাদক, অফিস সম্পাদক, শিক্ষা সম্পাদক, প্রচার সম্পাদক, প্রকাশনা সম্পাদক, সাহিত্য সম্পাদক, বায়তুল মাল সম্পাদক, গবেষণা সম্পাদক, আইটি সম্পাদক, কোচিং সম্পাদক, আন্তর্জাতিক সম্পাদক, বিতর্ক সম্পাদক, মানবসম্পদ উন্নয়ন সম্পাদক, অঞ্চল পরিচালক, অনুষদের সভাপতি, হল সভাপতি, হল সেক্রেটারি, ইনস্টিটিউট পরিচালক, উপশাখা পরিচালক ইত্যাদি।
কমিটিতে সহসভাপতি বা সহসম্পাদক নামে কোনো পদবি নেই বলে জানা যায়। পাশাপাশি সাধারণ সম্পাদক না বলে সেক্রেটারি জেনারেল বলা হয়।