আগামী জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে বেইজিং সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দিল্লি সফরের পরপরই শেখ হাসিনা বেইজিং সফর করবেন। পাঁচ বছর পর দেশটিতে সফরে যাবেন প্রধানমন্ত্রী।
ঢাকা-বেইজিংয়ের কূটনৈতিক সূত্রগুলো প্রধানমন্ত্রীর বেইজিং সফরের তথ্য নিশ্চিত করেছে। বেইজিংয়ের একটি কূটনৈতিক সূত্র বলছে, জুলাইয়ে প্রথম সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী বেইজিং সফরে যাবেন। প্রধানমন্ত্রীর সফরটি তিনদিনের হতে পারে।
ঢাকার একটি কূটনৈতিক সূত্র জানায়, ভারতের লোকসভা নির্বাচনের পর দিল্লি সফর করার কথা রয়েছে শেখ হাসিনার। আশা করা হচ্ছে, জুনের কোনো একটা সময়ে দিল্লি সফরে যাবেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী। তবে সফরটি জুনের শেষ নাগাদ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
টানা চতুর্থ মেয়াদে সরকার গঠনের পর শেখ হাসিনা প্রথম বিদেশ সফর করেন জার্মানিতে। গত ফেব্রুয়ারিতে তিনি দেশটিতে অনুষ্ঠিত মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্সে যোগ দেন।
বহুপক্ষীয় ফোরামের বাইরে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফরে কোন দেশে যাবেন, দিল্লি না বেইজিং-এ নিয়ে কূটনৈতিক মহলে বেশ আলোচনা ছিল। তবে সব আলোচনাকে পেছনে ফেলে সরকারপ্রধান গত মাসের (এপ্রিলের) শেষের দিকে ব্যাংককে প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর করেন।
বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রীকে বেইজিং নেওয়ার পরিকল্পনা ছিল চীনের। গত বছরের (২০২৩) ২৩ সেপ্টেম্বর চীনে অনুষ্ঠিত এশিয়ান গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনাকে অতিথি করতে চেয়েছিল চীন। তবে ওই সময়ে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দেবেন বলে সরকারপ্রধান চীনে যেতে পারবেন না বলে বেইজিংকে জানানো হয়েছিল।
পরে ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর থেকে প্রধানমন্ত্রীকে চীন সফরে নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে দেশটি। গত রমজানের মধ্যেও প্রধানমন্ত্রীকে চীন সফর করার একটা ‘তড়িঘড়ি’ প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু ঢাকার পক্ষ থেকে বেইজিংকে জানানো হয়েছিল, সরকারপ্রধান রমজান মাসে বিদেশ সফর করেন না।
গত মাসের (এপ্রিল) শুরুর দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। রাষ্ট্রদূত বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে আগামী জুলাইয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে চীন সফরের আমন্ত্রণ জানান। সেই আমন্ত্রণপত্র গ্রহণ করেছেন সরকারপ্রধান।
এদিকে, দুই দিনের সফরে বুধবার (৮ মে) সন্ধ্যায় ঢাকায় এসেছেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিনয় কোয়াত্রা। ভারতীয় পররাষ্ট্রসচিব বৃহস্পতিবার (৯ মে) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। কোয়াত্রা প্রধানমন্ত্রীকে দিল্লি সফরের আমন্ত্রণ পৌঁছে দিতে পারেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৯ সালের জুলাইয়ে সর্বশেষ চীন সফর করেছিলেন। তখন বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের সম্মেলনে অংশ নেওয়ার পর চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন।
গত বছরের আগস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে বৈঠক করেন হাসিনা-শি। ২০১৯ সালের পর দুই শীর্ষ নেতা ওই বৈঠকে বসেন।