বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রগতি মহাবিশ্বের লুকায়িত রহস্য উম্মোচন করছে এবং মানুষের সমস্যার সমাধানে নতুন অন্তর্দৃষ্টি দিচ্ছে। সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এজেন্সি চলতি জুলাই মাসজুড়ে সারা বিশ্বে যেসব মূল বৈজ্ঞানিক উন্নয়ন এবং আবিষ্কার হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম ৬টি তুলে ধরেছে।
স্বাস্থ্যের উন্নয়ন
পা-হারা মানুষ স্বাভাবিকভাবে হাঁটার স্বস্তি ফিরে পেয়েছে স্নায়ু-কেন্দ্রিক প্রযুক্তির মাধ্যমে তৈরি বায়োনিক পায়ের কারণে। স্ট্যান্ডার্ড প্রস্থেটিক্স ব্যবহারকারীদের তুলনায় ৪১ শতাংশ দ্রুত এবং স্বাচ্ছন্দ্যে হাঁটা-চলা করা যাবে বায়োনিক পা দিয়ে। এই বায়োনিক পা মাসল সেন্সরস দিয়ে সজ্জিত যা কৃত্রিম পায়ের নকশায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি এনে দিয়েছে।
এদিকে, নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্সের ৩০০টি নিউরনসহ মস্তিষ্কের সম্পূর্ণ চিত্র চিহ্নিত করা গেছে যা শব্দের প্রতি প্রতিক্রিয়াশীল। এসব নতুন প্রযুক্তি এবং ব্রেন-কম্পিউটার ইন্টারফেসের মাধ্যমে পরিচালিত যা দিয়ে কথা বলার ক্ষমতা হারিয়েছেন এমন ব্যক্তিরা সহায়তা পাবেন।
কোটি মানুষকে বায়ুমণ্ডলীয় পানি সরবরাহ
যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা এমন একটি যন্ত্র তৈরি করেছেন যা বাতাস থেকে জলীয় বাষ্প সংগ্রহ করে পানযোগ্য পানি তৈরি করতে পারে।
ইউটাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশলীদের তৈরি বিশেষ যন্ত্রটি হাইড্রোস্কোপিক উপাদান ব্যবহার জলীয় বাষ্প থেকে বিশুদ্ধ পানি তৈরি করে। যা ব্যবহার করে খরা কবলিত অঞ্চলের কোটি কোটি মানুষকে পরিষ্কার এবং বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা সম্ভব।
প্রাণী জগতে উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন
নতুন আবিষ্কারের মধ্যে রয়েছে ‘গ্লাস ফ্রগ’ প্রজাতি ব্যঙ বা সেন্ট্রোলিন কুতুকু। ইকুয়েডরের আমাজন রেইনফরেস্টে পাওয়া যায় এই নতুন প্রজাতির ব্যঙ যার তলপেট সম্পূর্ণ স্বচ্ছ।
উগান্ডা এবং তানজানিয়ায় ২৫০ টিরও বেশি শিম্পাঞ্জির ওপর করা একটি সমীক্ষা প্রকাশ করা হয়েছে। এদের যোগাযোগের ধরণ, যার মধ্যে কথা বলার জন্য পালা-গ্রহণ, দ্রুততার সঙ্গে মতবিনিময় এবং অঙ্গভঙ্গির ব্যবহার মানুষের শৈলীর মতোই।
মহাকাশ প্রযুক্তির উন্নয়ন
তুরস্ক প্রথমবারের মতো গার্হস্থ্য যোগাযোগ উপগ্রহ টুরকসাট ৬-এ স্পেস-এক্স এর ফ্যালকন-৯ রকেট ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রের কেপ ক্যানাভেরাল থেকে ৯ জুলাই উৎক্ষেপণ করেছে। এমন কৃতিত্ব তুরস্ককে এই ক্ষমতাসম্পন্ন ১১টি দেশের ক্লাবে পৌঁছে দেয়। এর ফলে তুরস্কের সক্রিয় স্যাটেলাইট সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৯টি। এবং তুরস্ক স্যাটেলাইট রপ্তানিকারক হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
এদিকে, পরস্পর প্রতিক্রিয়াশীল দুটি গ্যালাক্সি (ছায়াপথ) পেঙ্গুইন (এনজিসি ২৯৩৬) এবং এগ (এনজিসি ২৯৩৭) এর ছবি প্রথমবারের মতো ধারণ করেছে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ। এই দুটি শেষ পর্যন্ত একটি গ্যালাক্সিতে রূপান্তরিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।