ত্বকের উপরিভাগে মৃত চামড়ার দূর করার পদ্ধতি হল ‘এক্সফলিয়েশন’। সোজা বাংলায় যাকে বলে ঘষামাজা করা।তবে সাধারণ ঘষামাজার সাথে এই পদ্ধতির কিছু পার্থক্য রয়েছে।
এই বিষয়ে বস্টনের ত্বক-বিশেষজ্ঞ ডা. র্যাচেল রেনল্ডস ‘হার্ভার্ডহেল্থ ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেন, “সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখা যায়, বলিরেখা দূর করতে এক্সফলিয়েশন কার্যকর। তবে আমার সেটা মনে হয় না। বরং ত্বকের উপরিভাগে মৃত কোষ দূর করতে এই পন্থা ব্যবহার করা হয়।”
এক্সিফলিয়েশন’য়ের উপায়
সাধারণত দুভাবে এক্সফিলিয়েশন করা হয়। একটা হল রাসায়নিক অন্যটি হল মেকানিকাল বা দৈহিক।মেকানিকাল বা দৈহিক এক্সফলিয়েশন: এক্ষেত্রে ব্রাশ বা লুফা, স্পঞ্জ ইত্যাদি দিতে ত্বক ঘষামাজা করে মৃত কোষ অসারণ করা হয়।ডা. রেনল্ডস বলেন, “এর ফলে মলিন ত্বক উজ্জ্বল হয়। চামড়ার দীপ্তি আসে। তবে লোমকূপ উন্মুক্ত হয় বেশি, ফলে ব্রণের সমস্যা দেখা দিতে পারে।”রাসায়নিক এক্সফলিয়েশন: এই ক্ষেত্রে ত্বক-বান্ধব নানান ধরনের কেমিকেল বা রাসায়িনক দ্রব্য ব্যবহার করা হয়। যেমন- হাইড্রোক্সি বা স্যালিসাইলিক অ্যাসিড।“এসব রাসানিক তরল ব্যবহারের ফলে মৃত চামড়া নরম হয়। আর সুক্ষ্ম পর্যায়ে ত্বক পরিষ্কার করা যায়। এছাড়া ‘পেগমেন্টেইশন’ বা ত্বকে কালচে ও বাদামি ছোপ দূর করতেও সহায়তা করে”- ব্যাখ্যা করেন এই ত্বক-বিশেষজ্ঞ।
এছাড়া ত্বক বেশি মাত্রায় উজ্জ্বল হয়।না করা কি ক্ষতিকর?ডা. রেনল্ডস বলেন, “এক্সফলিয়শন’ না করলে তেমন কোনো ক্ষতি হবে না। শুধু ত্বক দেখতে মলিন ও শুষ্ক লাগতে পারে।”তিনি আরও বলেন, “বয়স যত হয় ততই দেহের ত্বকের বিভিন্ন অংশে শুষ্কতার পরিমাণ বাড়ে। ফলে মৃত চামড়া জমে আস্তর ওঠার মতো অবস্থা হয়। এর থেকে রক্ষা পেতে ‘এক্সফলিয়েশন’ জরুরি।আবার সংবেদনশীল ত্বকের ক্ষেত্রে বাজে প্রভাব ফেলতে পারে। অস্বস্তি বা জ্বালাভাব হয় অনেক সময়। আর অতি মাত্রায় করলে বা বেশি জোলে ঘষামাজার ফলে জ্বলুনি বাড়তে পারে।
এক্সফলিয়েশন করার নিরাপদ উপায়
এই চিকিৎসক দৈহিক এক্সফলিয়েশনের তুলনায় রাসায়ানিক এক্সফলিয়েশন পদ্ধতিকে বেশি প্রাধান্য দেন।তার কথায়, “অনেক সময় লুফা বা স্পঞ্জ দিয়ে ত্বক ঘষার কারণে ছিলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। রাসায়নিক তরল ব্যবহারে এক্ষেত্রে বেশি জোর দিতে হয় না।”ছাড়া নিরাপদে এক্সফলিয়েশন’য়ের জন্য যেসব বিষয় খেয়াল রাখতে হবে-
যদি আগে করার অভিজ্ঞতা না থাকে, তবে নরম কাপড় দিয়ে আলতো করে ত্বক ঘষামাজা করে বুঝে নিতে হবে চামড়া কতটা চাপ সইতে পারছে।তারপর স্বল্প মাত্রার রাসায়নিক তরল দিয়ে এক্সফলিয়েশন করা যেতে পারে। হাইড্রোক্সি বা স্যালিসাইলিক অ্যাসিডের পরিমাণ কম আছে এমন রাসায়নিক এক্সফলিয়েটর বেছে নিতে হবে।
যদি ত্বকের সমস্যা থাকে, যেমন- মেলাসমা (মুখে বাদামি বা কালচে ছোপ) এবং কোমেডনাল একনি বা ত্বকের রংয়ের সাথে মিলিয়ে কপালে বা চিবুকে ছোট ছোট দানা ওঠা- এক্ষেত্রে ‘কেমিকেল পিল’ ব্যবহার করা যায়। তবে আগে চর্মরোগ-বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।প্রতিদিন এক্সফলিয়েট করা যাবে না
ডা. রেনল্ডস বলেন, “সপ্তাহে দুতিনবার করা ভালো। কারণ এক্সফলিয়েট করার মধ্যবর্তী সময়ে ত্বক পুনর্গঠনের সুযোগ দিতে হবে।”