দেশের পূর্ব-দক্ষিণাঞ্চলের জেলা ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, খাগড়াছড়ি, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলা বন্যার কবলে পড়েছে। এবার বরিশালসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন নদ-নদীর পানিও বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল এরইমধ্যে জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। সেসঙ্গে খাল ও ড্রেন দিয়ে কীর্তনখোলা নদীর জোয়ারের পানি বরিশাল নগরের নিম্নাঞ্চলগুলোতে ঢুকে পড়ছে।
বুধবার (২১ আগস্ট) সন্ধ্যায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পানির স্তরের তথ্য বার জোন থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, বিভাগের মধ্যে বরিশাল নগর সংলগ্ন কীর্তনখোলা নদীর পানি এদিন বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
এছাড়া বরিশালের পাশের জেলা ঝালকাঠীর বিষখালী নদীর পানি বিপৎসীমার সর্বোচ্চ ১৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
অপরদিকে দিনের সর্বশেষ জোয়ারে ভোলা খেয়াঘাট সংলগ্ন তেঁতুলিয়া নদীর পানি বিপৎসীমার ৯ সেন্টিমিটার, ভোলার দৌলতখানের সুরমা-মেঘনা নদীর পানি বিপৎসীমার ৭৪ সেন্টিমিটার, তজুমদ্দিনের সুরমা-মেঘনা নদীর পানি বিপৎসীমার ৯২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
এদিকে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের বুড়িশ্বর/পায়রা নদীর পানি বিপৎসীমার ১২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
আর বরগুনার বিষখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ১৪ সেন্টিমিটার, বেতাগীর বিষখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ও পাথরঘাটার বিষখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
এছাড়া পিরোজপুরের বলেশ্বর নদীর পানি বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার ও উমেদপুরের কচা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের গেজ রিডার শাখার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান প্রধান নদীগুলোতে পানির স্তরের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। তবে আজ এসব নদীর সঙ্গে সংযুক্ত দক্ষিণাঞ্চলের সব নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। পূর্ণিমা ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে দক্ষিণাঞ্চলের নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে এসব নদী তীরবর্তী এলাকাসহ নিম্নাঞ্চলের অধিকাংশ মানুষ পানিবন্দি হয়ে চরম দুর্ভোগে দিন পার করছেন।
এছাড়া অন্যান্য পার্শ্ববর্তী নদ-নদীগুলোর পানি প্রতিদিন দুইবার জোয়ারের সময় বিপৎসীমা অতিক্রম করে স্থানীয়দের বসতবাড়ি প্লাবিত করছে।
বরিশাল সদর উপজেলার ভাঙার পার এলাকার বাসিন্দা রাসেল হোসেন জানান, নদীতে পানি বাড়লেই বসতঘর তলিয়ে যায়। এটা এখানকার নিত্যদিনের ঘটনা। বর্ষার মৌসুমে মাসের মধ্যে অধিকাংশ দিনই পানি বন্দি থাকেন বলে জানান তিনি।
মেঘনা নদীতীরের বাসিন্দা মালেক খান জানান, ঝড়ে বাড়ি ঘর উড়িয়ে নিয়ে যায়। বর্ষায়ও রক্ষা নেই। নদীর পানিতে ঘরবাড়ি তলিয়ে যায়। গবাদিপশু নিয়ে অন্যের বাড়িতে ঠাঁই নিতে হয়েছে। চরম দুর্ভোগে রয়েছেন বলে জানান তিনি।
বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী তাজুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় কয়েকটি নদীর পানি বিপৎসীমার প্রবাহিত হয়েছে। পূর্ণিমার জো ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে বৈরী আবহাওয়ার কারণে পানি বেড়েছে।
বাংলাদেশ উপকূলীয় এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হওয়ায় বরিশালে নদীর পানি বেড়েছে বলে জানান তিনি।