জাপানের হবু প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা জানিয়েছেন, তিনি অক্টোবরের ২৭ তারিখে পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের আহ্বান জানাবেন।
জাপানের ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) শুক্রবার তাকে নতুন নেতা হিসাবে বেছে নিয়েছে। এলডিপি পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হওয়ায় এই দলের নির্বাচিত নেতাই হন দেশের প্রধানমন্ত্রী।ওই দিন ভোট গ্রহণ করা হলে নির্দিষ্ট সময়ের এক বছর আগেই দেশটিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আর তাতে নির্ধারিত হবে কোন দল জাপানের পার্লামেন্টের নিম্ন কক্ষের নিয়ন্ত্রণ পাবে। মঙ্গলবার পার্লামেন্টের এই নিম্ন কক্ষেই দেশটির আইনপ্রণেতার মিলিত হয়ে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ইশিবার নির্বাচন নিশ্চিত করবেন।
সোমবার টোকিওতে এলডিপির সদরদপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে ইশিবা (৬৭) বলেন, “যত দ্রুত সম্ভব নতুন প্রশাসনকে জনগণের মাধ্যমে যাচাই করে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।”ইশিবাকে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে উচ্চ সুদের হারের পক্ষের আর্থিক নীতির লোক বলে বিবেচনা করা হয়। তিনি দেশটির পরবর্তী নেতা নির্বাচিত হওয়ার পরই প্রতিক্রিয়ায় ইয়েন শক্তিশালী হয় আর সরকারি বন্ডগুলোর চাহিদা বেড়ে যায়। এর ফলে সোমবার প্রাথমিক ট্রেডিংয়ে জাপানি শেয়ারের মূল্য ৪ শতাংশেরও বেশি হ্রাস পায়।
রয়টার্স জানিয়েছে, জাপানে দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকা দল এলডিপি’র নেতৃত্ব দেবেন ইশিবা। তিনি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার স্থলাভিষিক্ত হবেন। তার সঙ্গে সরকারে কে কে থাকবেন ও দলের কারা কারা আসছে সাধারণ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ইশিবা সোমবার থেকেই সেসব প্রার্থী বাছাই শুরু করে দিয়েছেন।ইশিবা রান-অফ (দ্বিতীয় দফা) ভোটে কট্টর জাতীয়তাবাদী সানায়ে তাকাইচিকে পরাজিত করে এলডিপি’র নেতৃত্ব পান। প্রায় ৯ জন পদপ্রার্থী ছিলেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) শীর্ষ নেতা হওয়ার দৌড়ে।
কয়েক দশকের মধ্যে রেকর্ড প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় এই নির্বাচনকে সবচেয়ে অনিশ্চিত এক নির্বাচন বলেই ধরে নেওয়া হয়েছিল।বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা দলের তহবিল কেলেঙ্কারি এবং জনপ্রিয়তায় ধসের মুখে গত অগাস্টে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছিলেন। ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এলডিপি) নেতা হিসেবে তিনি পুনর্নির্বাচিত হওয়ার চেষ্টা করবেন না বলেও জানিয়েছিলেন।তার সরে যাওয়ার ঘোষণায় এলডিপি পার্টিতে নতুন দলীয় প্রধান ও এর ধারাবাহিকতায় দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছিল তখন থেকেই।
মূলত দুর্নীতির কেলেঙ্কারিতে এলডিপি’র জড়িয়ে পড়া, বাড়তে থাকা জীবনযাত্রা ব্যয় ও ইয়েনের মান পড়ে যাওয়ার মতো কয়েকটি কারণে কিশিদার জনসমর্থন তলনিতে নেমেছে। গত মে মাসে তার পক্ষে জনসমর্থন নেমে মাত্র ১৫ দশমিক ৫ শতাংশে দাঁড়ায়। এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে জাপানে কোনও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে সর্বনিম্ন জনসমর্থন এটি।ইশিবা দাবি করেছেন, কৃষি খাতের সংস্কারসহ আরও জটিল সামাজিক সমস্যার সমাধান করে তিনি নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন।ইশিবা নতুন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর তাকে চীনের কাছ থেকে আসা আঞ্চলিক নিরাপত্তা হুমকির মুখোমুখি হতে হবে। পাশাপাশি, জাপানের অর্থনীতিতে নতুন করে প্রাণ ফিরিয়ে আনার দুরূহ দায়িত্ব বর্তাবে তার ওপর।