ধীরে ধীরে যতটা সম্ভব পশ্চিমা প্রযুক্তি পরিহার ও অন্যান্য দেশের ওপর প্রযুক্তিগত নির্ভরশীলতা কমাতে নিজস্ব বিভিন্ন প্রযুক্তি বিকাশে কাজ করছে রাশিয়া। এরই ধারাবাহিকতায় গেইম কনসোল তৈরির চেষ্টা করছে দেশটি।
বুধবার রাশিয়ার ‘স্টেট ডুমা কমিটি অন ইনফরমেশন পলিসি’র ডেপুটি চেয়ারম্যান অ্যান্টন গোরেলকিন শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তৈরি এক ঘরোয়া ভিডিও গেইম কনসোল সম্পর্কে কিছু তথ্য প্রকাশ করেছেন বলে প্রতিবেদনে লিখেছে প্রযুক্তি বিষয়ক সাইট টেকস্পট।
কনসোলটিতে থাকবে একটি ‘এলব্রুস’ প্রসেসর, যেটি চালিত হবে ‘অরোরা’ বা ‘অল্ট লিনাক্স’-এর অপারেটিং সিস্টেমের মাধ্যমে। উভয়ই জনপ্রিয় অপারেটিং সিস্টেম ‘লিনাক্স’-এর সংস্করণ।
টেকস্পট বলেছে, ‘মস্কো সেন্টার অফ স্পার্ক টেকনোলজিস’-এর মাধ্যমে তৈরি হয়েছে ‘এলব্রাস’ প্রসেসরটি। আর প্রাথমিকভাবে প্রতিরক্ষা, সমালোচনামূলক অবকাঠামো ও অন্যান্য অ্যাপ্লিকেশনের জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল এটিকে।
দুর্বল প্রকৃতির চিপসেট হলেও গোরেলকিন জোর দিয়ে বলেছেন, পুরানো বিভিন্ন গেইমের পোর্ট চালানোর জন্য ডিজাইন করা হয়নি এটি। তবে ‘ঘরোয়া ভিডিও গেইম খেলা যাবে’ এটি দিয়ে। যার মানে, এসব গেইম ডিজাইনের জন্য রাশিয়ার নিজস্ব ডেভেলপার কমিউনিটিরও প্রয়োজন হবে।
‘ফগ প্লে’ নামে আরও একটি কনসোল নিয়ে কাজ করছে রাশিয়া। তবে এটি একটি ক্লাউড-গেইমিং ডিভাইস। হাই-এন্ড কম্পিউটারওয়ালা ব্যবহারকারীরা এগুলো ‘ফগ প্লে’ মালিকদের কাছে ভাড়া দিতে পারেন। বিশেষ করে যারা ক্লাউডের মাধ্যমে এসব কম্পিউটারে গেইম খেলেন৷
এসব কনসোল তৈরি রাশিয়ার অন্যতম বড় প্রযুক্তিগত সার্বভৌমত্ব পরিকল্পনার কেবল একটি দিক বলে প্রতিবেদনে লিখেছে এনগ্যাজেট। ইউক্রেইনে আগ্রাসন ও পরবর্তী পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার পর থেকে রাশিয়া একে বাস্তবে রূপ দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে বিষয়টিকে কঠিন করে তুলছে দেশটির ডিজিটাল বিচ্ছিন্নতা।
সরকারি, গোয়েন্দা, সামরিক ও শিক্ষামূলক কম্পিউটারে ‘অ্যাস্ট্রা লিনাক্স’কে গ্রহণ করা রাশিয়ার নিজস্ব প্রযুক্তি বিকাশের আরেকটি প্রচেষ্টা। এ লক্ষ্যে মার্কিন সরকারের অনুপ্রবেশের আশঙ্কায় গুগলের মালিকানাধীন ‘ভাইরাসটোটাল’ নামের ফাইল এবং ওয়েবসাইট স্ক্যানারের পরিবর্তে নিজস্ব মাল্টিস্ক্যানার প্ল্যাটফর্ম তৈরির চেষ্টা করছে রাশিয়া।
এসব অগ্রগতির পরও চীনের প্রযুক্তির উপর এখনও অনেক বেশি নির্ভরশীল রাশিয়া। চীনা স্মার্টফোন দেশটিতে জনপ্রিয় এবং ইলেকট্রনিক্স ও ডুয়াল ইউজ প্রযুক্তি রাশিয়ায় প্রবেশ অব্যাহত রেখেছে চীন। ডুয়াল ইউজ বলতে এক্ষেত্রে এমন প্রযুক্তি বোঝায় যেগুলো সামরিক ও অসামরিক দুভাবেই ব্যবহার করা যায়।