আমাদের দেশের নদীতে পাওয়া যায় পাঙ্গাশ মাছ, তাছাড়া পুকুরেও চাষ হয়। এটি এমন এক ধরণের মাছ যা সহজেই রান্না করা যায়, আবার কাঁটার ভয়ে যারা মাছ খান না তাদের জন্যেও সুবিধা হয় খেতে। দাম কম হওয়ায় অনেকেই একে গরিবের ইলিশ মাছ হিসেবেও আখ্যায়িত করেন। তবে কেউ কেউ বলেন, পাঙ্গাশ মাছ শরীরের ক্ষতি করে। আসুন জেনে নেই শরীরের উপর কেমন প্রভাব পড়ে এ মাছের।
সব কিছুর ভালো এবং মন্দ দিক থাকতে পারে। প্রথমে আমরা জেনে নিই, পাঙ্গাশ মাছ খেলে শরীরে কী কী ধরনের উপকার হয়। তার পরে জানা যাবে, এই মাছের খারাপ দিকগুলি।
হার্টের রোগ প্রতিরোধ করে: এই মাছের কিছু উপাদান কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেমের সঙ্গে যুক্ত রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে। পাঙ্গাশ মাছে থাকা অসম্পৃক্ত চর্বি এই ধরনের রোগের প্রতিরোধে খুবই কার্যকর। পাঙ্গাশ মাছের মাংসে অসম্পৃক্ত চর্বির পরিমাণ এর মোট পুষ্টির মানের ৫০ শতাংশ পর্যন্ত আছে।
কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে: পাঙ্গাশ মাছে কম কোলেস্টেরল থাকে। যাদের শরীরে কোলেস্টেরলের মতো সমস্যা আছে, তারা এই মাছ খেতে পারেন। অসম্পৃক্ত চর্বির উপাদান শরীরে থাকা খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমাতে সাহায্য করতে পারে। ফলে আবারও হার্টের সমস্যা কিছু প্রতিরোধ হয়।
গর্ভে শিশুর বৃদ্ধিতে সাহায্য করে: গর্ভবতী মহিলাদের জন্য পাঙ্গাশ মাছ খুব উপকারী। গর্ভাবস্থায় ভ্রূণের স্বাস্থ্য এবং বৃদ্ধির জন্য উপকারী হতে পারে এটি। এই মাছে প্রচুর ওমেগা ৩ থাকার কারণে এটি গর্ভে থাকা ভ্রূণের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
পেশি গঠনে সাহায্য করে: যারা পেশি বাড়াতে ও শক্তিশালী করার জন্য ডায়েট প্রোগ্রাম করছেন, তাদের জন্য পাঙ্গাশ মাছ খাওয়া খুবই ভালো। এর উচ্চ প্রোটিন খুবই কার্যকর পেশি গঠনে। এর উপাদান পেশির ভর বাড়ায়, পেশি শক্তিশালী করে, পেশি শক্ত করে, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বজায় রাখে, শরীরের শক্তি বাড়ায়।
হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখে: পাঙ্গাশ মাছের হাড়ে এবং মেরুদণ্ডে ফসফরাস এবং উচ্চ ক্যালসিয়াম রয়েছে। এই উচ্চ ফসফরাস এবং ক্যালসিয়াম উপাদান শরীরের ফসফরাস এবং ক্যালসিয়ামের প্রয়োজনীয়তা মেটাতে সাহায্য করে। এছাড়াও স্বাস্থ্যকর হাড় এবং দাঁত বজায় রাখতে সাহায্য করে।
এ তো গেল গুণের কথা, এখন আমরা জানবো পাঙ্গাশ মাছের অপকারিতা বা ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে। অনেকেই বলেন, পাঙ্গাশ খাওয়া শরীরের জন্য মোটেই ভালো নয়। কেন এমন কথা বলেন তারা, আসুন জেনে নেওয়া যাক।
পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে বাজার থেকে আনা কিছু মাছের মধ্যে পাওয়া কীটনাশক ও রাসায়নিকের মাত্রা এতই বেশি যে এ মাছ খাওয়া পরিহার করতে হবে। মাছে পাওয়া প্রিজারভেটিভ এবং অ্যান্টিবায়োটিকগুলি শরীরে নানা ধরনের ক্ষতি করতে পারে। এটি যে কোনও মাছের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। এবং পাঙ্গাশও এর ব্যতিক্রম নয়।
এক কথায় বলতে গেলে, পাঙ্গাশ মাছের কোন অপকারী দিক নেই। কিন্তু মাছ তাজা রাখার জন্য যেসব ওষুধ, কীটনাশক বা রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়, তা মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর। তাই আমদের উচিত তাজা বা জীবিত পাঙ্গাশ মাছ কেনা। তাহলেই আর এটি খাওয়া নিয়ে কোনও ভয় থাকবে না। সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস